***যে ব্যক্তি আল্লাহর পরিবর্তে এমন বস্তুর পূজা করে, যে কেয়ামত পর্যন্তও তার ডাকে সাড়া দেবে না, তার চেয়ে অধিক পথভ্রষ্ট আর কে? তারা তো তাদের পুজা সম্পর্কেও বেখবর।*****আল্লাহ ছাড়া সত্য কোন উপাস্য নেই, তিনি চিরঞ্জীব, সবকিছুর ধারক। *** ওই ঈমানদারদের সাথে তাদের শত্রুতার এ ছাড়া আর কোন কারণ ছিল না যে তারা সেই আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছিল, যিনি মহাপরাক্রমশালী এবং নিজের সত্তায় নিজেই প্রশংসিত – (আল বুরুজ-৮) || যারা মুমিন পুরুষ ও নারীদের ওপর জুলুম - নিপীড়ন চালিয়েছে ,তারপর তা থেকে তওবা করেনি, নিশ্চিতভাবেই তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের আযাব এবং জ্বালা - পোড়ার শাস্তি – (আল বুরুজ-১০) || যারা ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করেছে নিশ্চিতভাবেই তাদের জন্য রয়েছে জান্নাতের বাগান যার নিম্নদেশে প্রবাহিত হতে থাকবে ঝরণাধারা৷ এটিই বড় সাফল্য – (আল বুরুজ-১১) || এই ওয়েবসাইট সম্পর্কে আপনার মতামত ও গঠনমূলক সমালোচনা জানিয়ে ই-মেইল করুন। *** হে আল্লাহ,আমাদেরকে তোমার সত্যের পথে পরিচালিত কর। আমাদের সম্মুখে তোমার পথ সহজ ও সরল করে দাও। আমীন...!

মঙ্গলবার, ১৭ জুলাই, ২০১২

রোযার ফজিলত।

রোযার ফজিলত।
রোযার ফজিলত আমরা নিন্মের কয়েকটি হদিস থেকে আমরা জেনে নেই।
১. হযরত আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন,রাসুল সা. বলেছেন : যে লোক রমযান মাসে রোযা রাখবে ঈমান ও চেতনা সহকারে তার পূর্ববর্তী ও পরবর্তী গুনাহ মাফ হয়ে যাবে।(বুখারী ও মুসলিম)
 ২. হযরত আবু সাঈদ খুদরী রা: হতে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি রাসুলুল্লাহ সা: কে বলতে শুনেছি, যে লোক একটি দিন রোযা রাখবে, আল্লাহ তার মুখমন্ডল জাহান্নাম হতে সত্তর বছর দূরে সরিয়ে রাখবেন। (বুখারী ও মুসলিম)
৩. হযরত সাহল ইবনে সাদ রা. থেকে বর্ণিত নবী কারীম সা. বলেন, জান্নাতে রাইয়ান নামক একটি বিশেষ দরজা রয়েছে। সে দরজা দিয়ে শুধুই রোযাদাররাই প্রবেশ করবে।
৪. হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন : তোমাদের নিকট রমযান মাস সমুপস্থিত । তা এক অত্যান্ত রবকতময় মাস । আল্লাহ এ মাসে তোমাদের প্রতি রোযা ফরয করেছেন। এ মাসে আকাশের দরজসুমূহ উন্মুক্ত করে দেয়া হয়, জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয় শয়তানগুলো আকট করে রাখা হয়। এ মাসে একটি রাত আছে যা হাজার মাসের চেয়ে উত্তম। যে লোক এ মাসে তার মহা মহাকল্যাণ লাভ হত বঞ্চিত থাকল, সে সত্যিই হতভাগা। (নাসাঈ ও বায়হাকী)
তাকওয়া অর্জন, আল্লাহ কাছে নিজেকে তাঁর প্রিয় এক বান্দা হিসেবে উপস্থাপন, নিজের গুনাহসমূহ মাফ করানো,বেশী বেশী ইবাদাত করা, নফল নামাজ আদায় করা, আল্লাহর রাস্তায় দান খয়রাত ইত্যাদি কাজ করে আল্লহার নৈকট্য হাসিল করার তাওফিক দান করুক। আমিন। 

হুযুরে পাক (সঃ) ইরশাদ করেন, পবিত্র রমযান মাসের জন্য বেহেশতকে অপূর্ব সুঘ্রাণ দ্বারা সুরভিত করা হয়। বৎসরের প্রারম্ভ হইতে শেষ পর্যন্ত উহাকে শুধু রমযানের জন্য সুসজ্জিত করা হয়। যখন রমযানের প্রথম রজনী আগমন করে তখন আরশের তলদেশ হইতে একটি সুমধুর বাতাস বহিতে থাকে, যাহার প্রবাহে বেহেশ্‌তের পাতা পল্লব ও দরজার কড়াসমূহ হেলিতে আরম্ভ করে। যদদ্বারা এমন এক মনমুগ্ধকর ও হৃদয় স্পর্শী সূর উত্থিত হয় যে, শ্রোতারা ইতিপূর্বে কখনোও এইরূপ আর শুনিতে পাই নাই।
হুযুরে পাক (সঃ) বলেন, আল্লাহ পাক বেহেশতের দারোগা রেদওয়ানকে বলিবেন, মুহাম্মাদ (সঃ)-এর রোজাদার উম্মতের জন্য জাহান্নামের দরওয়াজা বন্ধ করিয়া দাও। জিব্রাঈল কে হুকুম করেন, যমীনে অবতরন করিয়া অহংকারী শয়তানকে শৃংখলাবদ্ধ কর এবং তাহার গলায় বেড়ী পরাইয়া সমুদ্রে নিক্ষেপ কর যেন আমার মাহবুবের উম্মতের রোযাকে নষ্ট করিতে না পারে। আল্লাহ পাক রমযানের প্রতি রাতে একজন ঘোষনাকারীকে হুকুম করেন যে,সে যেন তিনবার করিয়া বলে, কেহ সাহায্য প্রার্থী আছে কি ? আমি তাহাকে সাহায্য করিব।আছে কেহ তওবা কারী , আমি তাহার তওবা কবুল করিব। আছে কেহ ক্ষমা প্রার্থী , আমি তাহাকে ক্ষমা করিব। কে আছে এমন যে মুখাপেক্ষী নয় , এমন ধনীকে কর্জ দান করে। আর বিন্দু মাত্র কম না করিয়া কর্জ পরিশোধ করে।
হুযুর (সঃ) আরো বলেন, আল্লাহ তাআলা প্রতিদিন ইফতারের সময় জাহান্নামের উপযোগী ১০,০০,০০০ লোককে ক্ষমা করিয়া দেন এবং রমযানের শেষ তারিখে, প্রথম হইতে শেষ পর্যন্ত যত লোক নাজাত পাইয়াছে সকলের বরাবর লোককে আজাদ করিয়া দেন। আল্লাহ পাক জিব্রাঈল (আঃ) -কে ক্বদরের রাত্রে নির্দেশ প্রদান করেন, সে ফেরেশতাদের এক বিরাট বাহিনী লইয়া যমীনে অবতরন করেন , তাহাদের সহিত সবুজ রংয়ের ঝাণ্ডা থাকে যাহা ক্বাবা শরীফের উপর উড্ডীন করা হয়।হযরত জিব্রাঈল (আঃ) একশত ডানার মধ্যে সেই রাত্রে মাত্র দুইটি ডানা প্রসারিত করেন যাহা মাশরেক -মাগরেব ঘিরিয়া ফেলে। অতঃপর জিব্রাঈল (আঃ) ফেরেশতাদের তাকীদ করেন তাহারা যেন প্রত্যেক ইবাদত কারীরর সহিত মোছাফাহা করে এবং তাহাদেরকে ছালাম করে ও তাহাদের দোয়ার উপর আমিন আমিন বলিতে থাকে। ভোর পর্যন্ত উক্ত অবস্থা চলিতে থাকে। সকাল বেলায় হযরত জিব্রাঈল (আঃ) ফেরেশতাদিগকে প্রস্থান করার হুকুম দেন। ফেরেশতারা জিব্রাঈল (আঃ)-কে জিজ্ঞাসা করেন, আহমাদ (সঃ)-এর উম্মতের সহিত অদ্য রাত্রে কি ব্যবহার করা হইয়াছে ? তিনি বলেন , চার ব্যক্তি ব্যতিত সকলকে আল্লাহ পাক ক্ষমা করিয়া দিয়েছেন।
সাহাবারা হুযুর (সঃ)-কে জিজ্ঞাসা করিলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ (সঃ)! ঐ চার ব্যক্তি কাহারা ? হুযুর (সঃ) বললেন, প্রথম ঐ ব্যক্তি যে মদখোর, দ্বিতীয় মাতাপিতার নাফরমান সন্তান, তৃতীয়তঃ আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী, এবং চতুর্থ হিংসুক।
মাহে রমযানের বিদায়ের কালে গত একটি মাসের হিসেব আরো একবার মিলেয়ে নেই ।

কোন মন্তব্য নেই: