আত্মশুদ্ধির মাস এই পবিত্র মাহে রমযান
বিশ্বমানবতার মুক্তির বার্তা নিয়ে বছর পরিক্রমায় মুসলমানদের জীবনধারায় রমযান উপস্থিত। মুসলিম জনগোষ্ঠী এ মাস সিয়াম সাধনার মাধ্যমে রহমত বরকত ও মাগফিরাতের অফুরন্ত নিয়ামত হাসিল করার সুযোগ পাবে। আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে আত্মোন্নতি করে জীবনকে গঠন করে নিবে কুরআন নাযিলের এ মাসে। গোটা মুসলিম বিশ্ব যেমন সাজবে নতুন সাজে তেমনি মুমিনের জীবনও ধন্য হবে মুক্তির নতুন পরশে। মহান প্রভুর সান্নিধ্য লাভের অপার আকাঙক্ষায় মুমিনের হ্নদয় হবে ব্যাকুল। স্রষ্টার আকর্ষণে মুমিন ইবাদত- বন্দেগীতে হবে মশগুল। এ মাস প্রাপ্তির অনন্য সুযোগ কেউই হাতছাড়া করতে চায় না। এ মাসের রোযা পালনের সুযোগ পেয়েও যদি কেউ তার গুনাহ ক্ষমা করিয়ে না নিতে পারে হাদিসের ভাষায় তার চেয়ে দুর্ভাগা আর কেউ নেই। তাই এ মাসে সিয়াম পালনে মুমিনের জীবনে এমন সব প্র‘তি থাকা প্রয়োজন,
যাতে সিয়ামের সকল আবেদনের পূর্ণ হক আদায় করা সম্ভব হয়। সফল হয় সকল আয়োজন, মিলে যায় মহান মালিকের ঘোষিত পুরষ্কারটি।
সিয়াম সাধনা বা রোযা পালনের বিধান সকল নবী-রাসুলের যুগেই পালনীয় ছিল। হযরত আদম (আঃ) থেকে শুরু করে বর্তমানকাল পর্যন্ত এর
ধারাবাহিকতা চলে আসছে ঐতিহাসিকভাবেই। তবে রোযা
পালনের নিয়ম সময়ের দিক থেকে তাতে অনেক ব্যবধান ছিলো বলে জানা যায়। খ্রিষ্টান সম্প্রদায় ফিরাউনের নীলনদে নিমজ্জিত হওয়ার দিন রোযা রাখতেন। পরে এর সাথে সংযোগ করতে করতে
রোযার সংখ্যা পঞ্চাশে গিয়ে পৌঁছে। তাফসিরবিদ
হযরত কাতাদাহ (রঃ) বলেন, মাসে তিনদিন রোযা রাখার বিধান হযরত নুহ (আঃ) -এর যুগ থেকে শুরু করে রাসুল (স)
এর যুগ পর্যন্ত বলবৎ ছিল। রোযা পালনের এই
পরিবর্তনের ধারাবাহিকতায় লোকেরা যখন আদর্শচ্যুত ও বিধানকে বিকৃত করতে শুরু করলো তখন রোযার ধর্মীয় তাৎপর্য ও বৈশিষ্ট্য মিটে গিয়ে কেবল আনুষ্ঠানিক প্রথায় পরিণত হয়। তাই রোযাকে
রহমত বরকত মাগফিরাতের দিকে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে
এবং রোযাকে আত্মিক, নৈতিক ও চারিত্রিক
কল্যাণের ধারক বানানোর নিমিত্তে
আল্লাহ তাআলা ২য় হিজরির রমযান মাসে রোযাকে উম্মতের জন্য ফরয করে দেন। আল্লাহ ঘোষণা করলেনঃ ‘ওহে তোমরা যারা ঈমান এনেছ! তোমাদের জন্য সিয়াম পালনের বিধান দেয়া হলো যেমনি তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর দেয়া হয়েছিল, যাতে তোমরা তাকওয়াবান হতে পারো’ (সুরা বাকারাঃ ১৮৩)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন