বি,এস এফ কতৃক বাংলাদেশী যুবকের উপর অমানুষিক নির্যাতনের এই ভিডিও দৃশ্যটি দেখার পর আমাকে কিছুক্ষণের জন্য হলেও থামিয়ে দিয়েছে। বুকের শীতল অনুভুতি গুলো আগুনের লেলিহান অগ্নির মত দাউ দাউ করে জ্বলে উঠেছে। সীমাহীন কষ্ট বুকের মধ্যে চাপা রেখে নীরব প্রতিবাদের ভাষা নিয়ে শরীরের সমস্ত শক্তি হাতের মুষ্ঠীতে এসে আবদ্ধ হয়েছে। কিছু বুঝে উঠার আগেই টেবিলের উপর প্রচন্ড জোরে ঘুষি মেরে বসলাম। আমি জানি, এটি ছিল আমার কিছু না করতে পারা অসহায়ত্বের বহিঃপ্রকাশ। বিবেকের কাছে আবেগের প্রশ্ন করে জেনেছি। শরীরের সমস্ত রক্ত কি আজ হিম ঘরে জমাট বাধা বরফ? তাহলে করছো না কেন কোন প্রতিবাদ! আমার এই পোষ্ট মূলত সেই নৈতিক চেতনার সামান্য প্রতিবাদ। আমি মনে প্রানে বিশ্বাস করি , বাংলাদেশের দেশপ্রেমিক ,মানবতার মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রতিটি জনতার হৃদয়কে আরেকবার প্রচন্ড ভাবে ধাক্কা দিয়েছে। করেছে আহত, ক্ষতবিক্ষত, রক্তাক্ত। কিন্তু আমাদের দূর্ভাগ্য হলো আমাদের চাটুকারী সরকার আমাদের সেই কষ্ট উপলব্দি করতে ব্যর্থ হচ্ছে বার বার। আমাদের মেরুদন্ডহীন তাবেদার সরকার ক্ষমতার চেয়ার আকড়ে ধরে উটপাখির মত মরুভূমিতে মুখ গুজে রয়েছে। এত অন্যায়, অত্যাচারের পরও বন্ধুর প্রতি সব উজাড় করে দিতে একটুও কার্পন্য বোধ করছে না। সীমান্তে প্রতিনিয়ত বি,এস,এফ দ্ধারা বাঙ্গালীদের উপর লংগীত হচ্ছে মানবতা অথচ এই আওয়ামী সরকার সেই মানবতা রক্ষায় জোরালো কোন প্রতিবাদ করছে না। তাহলে কি বুঝবো ক্ষমতার বিনিময়ে মানবতা বিক্রি হয়ে গেছে! কিন্তু আমরাতো পারি না মানবতার এই বেচা-কেনার সওদায় অংশীদার হতে।
সীমান্তের কাটাতারে মানবতা আজ ক্ষতবিক্ষত। তাইতো দেখেছি , আমার বোন ফেলানীর নিথর দেহ কিভাবে মৃত পাখির মত মুখ থুবড়ে পড়ছিল মানবতাকে রক্তাক্ত করা সীমান্তের ঐ কাটাতারের উপর। যার কোমল হাতে কিছুদিন পরেই মেহেদীর রঙ্গে রাঙ্গাবার কথা ছিল। সেই হাতে মানবতার নিদারুন ছাপ একে দিয়েছিল বি,এস এফ নামক ঐ হায়েনার দল। আমাদের ভাইদের ওরা কুকুরের মত গুলি করে হত্যা করছে। ওরা মানুষ নয় ; হতে পারে মানুষের মত দেখতে; কিন্তু আমি কিছুতেই ওদের মানুষ বলতে রাজী নই। ওই পশুদের প্রতি আমি যতোটা ক্ষুব্দ ততোটা আহত সরকারের তপ্তহীন প্রতিবাদ দেখে। নতজানু পররাষ্ট্র নীতি আমাদের ভাবতে বাধ্য করছে। আমরা কি আদৌ স্বাধীন ? নাকি পরের অধীনে বন্দী আমাদের স্বাধীনতা! সরকার সেদিন যদি ফেলানী হত্যার জোরালো প্রতিবাদ জানাতো তাহলে হয়তো ঐ পশুরা আজ এমনটি করতে সাহস পেতো না। আমাদেরকেও এভাবে চোঁখ ঢেকে লজ্জিত হতে হতোনা। নির্যাতনের এই দৃশ্য যেরকম আমাকে রক্তাক্ত করেছে সেভাবে করেছে লজ্জিত। আমি জানিনা সরকার এই লজ্জা উপলব্দি করার নৈতিক চেতনা রাখে কিনা! হ্যাঁ, আজও হয়তো প্রতিবাদ হবে! ফেলানীর মতো এখনো হবে চারিদিকে মানবতার নানা আয়োজন। রঙ বেরঙের মানবতার সাজে সবাই সাজবে। সুশীল সমাজ সেখানে নব নব বার্তা শুনাবে। আর আমরা তা শুনে হব পুন্যবান । মানবতা এখন শুধু পুস্তকের ভাষা। আবেগ, মূল্যবোধ, নীতি কথা এগুলো সরকারকে এখন আর ভাবায় না। মানুষ নাকী মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য। তাহলে মানুষ কেন মানুষের প্রতি এমন নির্মম হবে। পশুও তো তার স্বজাতীর প্রতি এমন নির্মম আচরন করে না। তাহলে এই সব নীতি কথা, মূল্যবোধ, মানবতা শুধুই কি এক অর্থহীন প্রলাপ।
না! আমরা বিবেকবান, সচেতন জনতা কখনোই তা হতে দিতে পারি না। উটপাখির মত নয়, আমরা জেগে উঠতে চাই সিংহের মত। হুংকার দিয়ে আমদের জেগে উঠতেই হবে। বাংলার তরুন-তরুনীরা তারুণ্যের অদম্য সাহস আর শক্তি নিয়ে সীমান্তে মানবতার শক্ত প্রাচীর আমরা গড়ে তুলবোই! পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তরে লাউড স্পিকারের মত পৌছে দিতে হবে আমাদের প্রতিবাদী আওয়াজ। আমরা বুঝে গেছি ক্ষমতার মসনদে বসে থাকার জন্য চাটুকারী আওয়ামী সরকার (ভারত)বন্ধুকে খুশী রাখতে ড্রামে ড্রামে তৈল ঢালে যাচ্ছে বন্ধুর পায়ে। সরকার কিছু অর্জন করতে না পারলেও বন্ধুর পায়ে তৈল মর্দনে বিশেষ পারদর্শিতা অর্জন করতে পেরেছে। ভারতের এই পর্যন্ত আচরনে আমরা কিভাবে তাদের বন্ধু ভাবতে পারি? প্রতিবেশী হিসেবে সাহায্য তো দূরের কথা আমাদের পাওনা অধীকারটুকুই তো ওরা দিতে চায়না। কিন্তু আমরা সাধারন জনগন আর কোন ফেলানীকে দেখতে চাই না ঝুলন্ত অবস্থায় ঐ কাটাতারের উপর; কোন যুবককে উলঙ্গ অবস্থায় নির্যাতনের চিত্র দেখে লজ্জায় চোঁখে আঙ্গুল দিতে না হয় সেই কঠিন প্রতিবাদের ভাষা নিয়ে এখনি আমাদের মাথা উচু করে দাঁড়াতে হবে। সরকারকে বিনয়ের সাথে বলতে চাই, বন্ধুকে খুশি রাখতে আর কতো ফেলানীর জীবন দিতে হবে । আর কতো উলঙ্গ করবে আমাদের স্বাধীনতা , সার্বভৌমত্বকে। শুনেছি, এখনও নাকি বি,এস,এফ আমাদের এক বিজিবি সদস্যকে আটক করে রেখছে। যদি ষোল কুটি জনতার প্রতি তোমাদের বিন্দু পরিমান দায়িত্ব আছে বলেও মনে কর, তবে এখনি এই নির্যাতনের শক্ত প্রতিবাদ জানাও। শক্ত হাতে আমাদের পাওনা অধিকার যদি নাদেয় তবে ছিনিয়ে আনো। কথা দিচ্ছি ,আমরা বাংলার এই ষোল কুটি জনগন তোমাদের সাথে থাকবো। তা নাহলে ভূলে যেওনা , আমদের করুনার ফল তোমাদের ঐ ক্ষমতার মসনদ; ঐ মসনদ থেকে তোমাদের ছুড়ে ফেলে দিতে আমাদের বাধ্য করো না।
স্বাধীন বাংলাদেশকে প্রতিবেশী বন্ধুর দেয়া এই রকম অসংখ্য উপহারের সামান্য কিছু নিদির্শন নিছে তুলে ধরলাম
ফেলানী তোমার নিশ্বাপ প্রানের কসম,এই পৃথিবীতে বাচবো যতদিন; তোমাকে হত্যার প্রতিশোধের আগুন বুকে জ্বলবে ততদিন । তোমাকে আমরা ১৬ কোটি বাঙ্গালী কখনোই ভুলবো না।
সোনিয়া গান্ধী বাংলাদেশ থেকে নিয়ে গেছে কোটি টাকার স্বর্নপদক সাথে বাংলাদেশকে দিয়ে গেছে এই উপহার।
মিন্টুজয় মন্ডল ; বিএসএফ নির্যাতনে হারিয়েছেন হাত ও একটি চোখ ।
গুলি করে কুকুর মারার মত এক বাংলাদেশীকে হত্যা করল কিছু বিএসএফ ।
বিএসএফের গুলিতে মরে পড়ে থাকা এক অসহায় বাংলাদেশী
রিনা বেওয়ার ও তার সন্তান । নিস্পাপ, অসহায় এই সন্তানগুলোর বাবাকে নরপশু বিএসএফ-র নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করে।
বাংলাদেশীদের প্রাণের কি কোনই মূল্য নেই ভারতীয় বিএসএফদের কাছে.....
দূর্গা চরন মন্ডল এবং তনুবালা মন্ডলের সন্তান শিবজিত মন্ডল (২৮) প্রান হারায় ভারতীয় বাহিনীর গুলিতে।
এরি নাম কি মানুষের জীবন ! হায়রে অভাগা বাংলাদেশী !
বাঙ্গালী বধূ পালকি করে একসময় শ্বশূর বাড়ি যেত। ওরা পালকির মত এই বধূকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে?
http://www.sonarbangladesh.com/blog/sharif/88221
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন