বুধবার, ১৫ আগস্ট, ২০১২

ইসলামী শিক্ষা আন্দোলনের কর্মীদের জন্য অনুপম আদর্শ শহীদ আব্দুল মালেক

ডা. মোঃ ফখরুদ্দিন মানিকঃ
শহীদ আব্দুল মালেক ভারতীয় উপমহাদেশের ইসলামী শিক্ষা আন্দোলনের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। যার আলো ঠিকরে পড়েছে ইসলামী আন্দোলনের সকল কর্মীদের অন্তরে। ১৫ আগস্ট ইসলামী শিক্ষা আন্দোলনের এক অবিস্মরণীয় দিন। ছাত্রলীগ, ছাত্র ইউনিয়ন এবং ছাত্র মৈত্রীর ধর্মহীন নৈতিকতা বিরোধী শিক্ষা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ইসলামী শিক্ষার যৌক্তিকতা উপস্থাপন করতে গিয়ে ১৯৬৯ সালের ১২ আগস্ট বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের নির্মম আঘাতের শিকার হন তিনি। ১৫ আগস্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শাহাদাত বরণ করেন।  সমাপ্তি ঘটলো একটি সম্ভাবনাময় নেতৃত্বের। সেই সাথে সারা দেশের ইসলাম প্রিয় তরুণদের সামনে উজ্জীবিত হল এক নতুন জীবন।


১৯৪৭ সালে বগুড়া শহরের অদূরবর্তী থানা ধুনটের খোকসা বাড়িতে মৌলভী আহম্মদ আলী সাহেবের ৫ ছেলের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ সন্তান আব্দুল মালেক। খোকসা বাড়ির প্রাইমারি স্কুল থেকে তাঁর শিক্ষা জীবন শুরু। প্রাইমারি স্কুল শেষে গোসাইবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয় তারপর অষ্টম শ্রেণীর বৃত্তি নিয়ে বগুড়া জেলা স্কুলে নবম শ্রেণীতে ভর্তি হন। বগুড়া জেলা স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় ১৬তম স্থান নিয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা জীবন শেষ করেন। রাজশাহী সরকারি কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে ৪র্থ স্থানসহ এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পরবর্তীতে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাণ রসায়ন বিভাগে ভর্তি হন এবং ডিপার্টমেন্টের মেধাবী ছাত্র হিসেবে ১ম স্স্থান অধিকার করেন।

স্কুল জীবন থেকে শহীদ আব্দুল মালেক মৌলভী মহিউদ্দিন সাহেবের মাধ্যমে ছাত্র সংঘের দাওয়াত পান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর খুব দ্রুত সংগঠনে এগিয়ে এসে সর্বোচ্চ মান সদস্যে উন্নীত হন। একপর্যায়ে ঢাকা মহানগরী এবং নিখিল পাকিস্তান কেন্দ্রীয় মজলিস-উশ-শূরার সদস্য নির্বাচিত হন
শাহাদাতের প্রেক্ষাপট : পাকিস্তান আমলের সর্বশেষ শিক্ষা কমিশন গঠিত হয় অবসরপ্রাপ্ত এয়ার মার্শাল নূর খানের নেতৃত্বে। তৎকালীন ইসলামী ছাত্র সংঘের নেতৃবৃন্দও অতীতের সকল কমিশনের রিপোর্ট, ফলাফল এবং ব্যর্থতা পর্যালোচনা করে শিক্ষা ব্যবস্থার উপর একটি সুপারিশমালা তৈরি করে। ১৯৬৯ সালে ছাত্র সংঘের প্রতিনিধি দল সুপারিশমালা নিয়ে কমিশনের সদস্যদের সাথে সাক্ষাৎ করে কমিশনের কাছে একটি খসড়া নীতিমালা পেশ করেন। ২ আগস্ট ১৯৬৯ সালে "National Institute of Public Administration" (NIPA) জনমত সংগ্রহের উদ্দেশ্যে সরকারের পক্ষ থেকে ‘‘শিক্ষার আদর্শিক ভিত্তি’’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে। কিন্তু বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলো শুরু থেকে এর বিরোধিতা করে আসছিল। শহীদ আব্দুল মালেকসহ ছাত্র সংঘের নেতৃবৃন্দ সেই আলোচনায় অংশগ্রহণ করে মাত্র ৫ মিনিটের বক্তব্যে বামপন্থী সকল ছাত্র সংগঠনের সকল যুক্তিকে হার মানিয়ে সকলকে বুঝাতে সক্ষম হন। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র-শিক্ষক মিলনায়তনে ডাকসু কর্তৃক ১২ আগস্ট আরো একটি আলোচনা সভার আয়োজন করে। এতে মূল আয়োজক ছিল বামপন্থী শিক্ষকরা। তারা সেখানে শহীদ আব্দুল মালেককে অংশগ্রহণ করতে না দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেআলোচনা চলাকালীন সময়ে ছাত্রদের পক্ষ থেকে শহীদ আব্দুল মালেককে বক্তৃতা দেয়ার অনুরোধ করলে সেখানে ছাত্রলীগ এবং ছাত্র মৈত্রীর কর্মীরা গন্ডগোল শুরু করে। শহীদ আব্দুল মালেক ছাত্র সংঘের সকল নেতাকর্মীদের টিএসসি থেকে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়ে যখন চলে আসছিলেন তখন তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী ময়দান) তাঁর উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে তাঁকে আহত করে। একপর্যায়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেললে সন্ত্রাসীরা তাকে মৃত ভেবে ফেলে রেখে চলে যায়। মুহূর্তের মধ্যে সংঘের কর্মীরা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করে। ১২-১৫ তারিখ অজ্ঞান থাকার পর চিকিৎসকদের সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে তিনি আল্লাহর দরবারে চলে যান।

শহীদ আব্দুল মালেকের শাহাদাতৎ দিক পরিবর্তন করে দিয়েছে ইতিহাসের গতির। মালেকের রক্ত সমুদ্রের উর্মিমালাকে করেছে আরো বেশি উত্তাল যা আছড়ে পড়েছে বাংলাদেশের প্রতিটি প্রান্তর জনপদে। শহীদের প্রতিটি রক্তকণা থেকে তৈরি হয়েছে লাখ লাখ আব্দুল মালেক। শাহাদাতের জজবা তীব্রতা তৈরি করেছে কিশোর-তরুণ-যুবক-বৃদ্ধ সকলের প্রাণে। তাইতো শহীদ আব্দুল মালেকের নেতা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী স্মৃতি চারণ করতে গিয়ে বলেছেন, তুমি পরে এসে আগে চলে গেছো, আল্লাহর দরবারে অনেক বড় মর্যাদায় ভূষিত হয়েছ, তাই তোমাকে বড় ঈর্ষা হয়। শাহাদাতের পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত তোমাকে বিশ্বস্ত সঙ্গী হিসেবে একনিষ্ঠ সহকারী হিসেবে নির্দেশ দিয়েছি। কিন্তু আল্লাহর দরবারে শাহাদাৎ কবুলের মুহূর্ত থেকে আমি তোমাকে নেতা মেনেছি। তোমার কর্মতৎপরতা আত্মগঠনে নিষ্ঠা ও ঐকান্তিকতা সাংগঠনিক শৃক্মখলা ও আনুগত্যের প্রশ্নে সতর্কতা ও ন্যায়নিষ্ঠার যে উদাহরণ তোমার জীবন থেকে আমি পেয়েছি তা সাধ্যমত নিজে অনুসরণ করা ও অন্যকে অনুসরণে উদ্বুদ্ধ করাকে আমার নৈতিক দায়িত্ব মনে করছি’’

শহীদ আব্দুল মালেক ইসলামী শিক্ষা আন্দোলনের কর্মীদের জন্য এক অনুপম আদর্শ। ব্যক্তিগত জীবন, ছাত্রজীবন ও সাংগঠনিক জীবন সম্পর্কে যতটুকু তাঁর আচরণ, তাঁর লেখনি, চিঠি-পত্রের আদান-প্রদান, দায়িত্বশীলদের সাথে মেলামেশা ও সহপাঠি বন্ধুদের মাধ্যমে প্রকাশিত লেখায় শহীদ আব্দুল মালেকের জীবন ছিল আসহাবে রাসূলের জীবনাচরণের প্রতিচ্ছবি। যা হতে পারে আমাদের জন্য গাইড লাইন। দুনিয়ার জীবনকে তিনি খুব তুচ্ছ করে দেখেছেন। তাঁর সহপাঠি ও সহকর্মীরা তাকে পরীক্ষায় খুব ভাল ফল করার দিকে মনযোগী হওয়ার পরামর্শ দিলে মৃদু হেসে তিনি বলতেন, ‘‘বেঁচে থাকার জন্য ডিগ্রি নিতে হবে যাতে আয়-রোজগারের একটা পথ হয়। কিন্তু ওটাকে জীবনের চরম লক্ষ্য বানিয়ে নিতে চাই না। খুব ভাল রেজাল্টের ধান্দা করলে ক্যারিয়ার গড়ার নেশায় পেয়ে বসবার আশঙ্কা আছে’’

নবম শ্রেণীতে পড়া অবস্থায় বাবার কাছে লিখেছেন, ‘‘বাড়ির কথা ভাবিনা আমার শুধু এক উদ্দেশ্য খোদা যেন আমার উদ্দেশ্য সফল করেন। কঠিন প্রতিজ্ঞা নিয়ে এসেছি এবং কঠোর সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়েছি। দোয়া করেন খোদা যেন সহায় হন। আমি ধন-সম্পদ কিছুই চাইনা শুধু যেন প্রকৃত মানুষরূপে জগতের বুকে বেঁচে থাকতে পারি।’’ মায়ের অকৃত্রিম ভালবাসাও তিনি আন্দোলনের প্রয়োজনে ছিন্ন করতে ছিলেন বদ্ধ পরিকর। তাই তিনি লিখেছিলেন, ‘‘মায়ের বাঁধন ছাড়া আমার কিছুই নেই, বৃহত্তর কল্যাণের স্বার্থে সে বন্ধনকে ছিঁড়তে হবে। কঠিন শপথ নিয়ে আমি আমার পথ চলতে চাই। আশীর্বাদ করবেন সত্য প্রতিষ্ঠার এই সংগ্রামে যেন আমার জীবনকে আমি শহীদ করে দিতে পারি।’’
ইসলাম প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে তিনি ছিলেন আপোষহীন, নির্ভীক। কোনো প্রতিবন্ধকতা তাঁর পথ আগলে রাখতে পারেনি। পাহাড়সম দৃঢ়তা নিয়ে এগিয়ে ছিলেন সম্মুখ পানে। তাঁর বলিষ্ঠতা, আত্মবিশ্বাস এবং সংগ্রামী চেতনার পরিচয় মিলে এই লেখায়, ‘‘জানি আমার দুঃসংবাদ পেলে মা কাঁদবেন, কিন্তু উপায় কি বলুন? বিশ্বের সমস্ত শক্তি আল্লাহর দেয়া জীবনকে পৃথিবীর বুক থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করছে। আমরা মুসলমান যুবকরা বেঁচে থাকতে তা হতে পারেনা। হয় বাতিল উৎখাত করে সত্যের প্রতিষ্ঠা করবো নচেৎ সে প্রচেষ্টায় আমাদের জীবন শেষ হয়ে যাবে। আপনারা আমায় প্রাণ ভরে দোয়া করুন জীবনের শেষ রক্ত বিন্দু দিয়েও যেন বাতিলের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে পারি। কারাগারের অন্ধকার, সরকারী যাতাকলের নিষণ যেন আমাকে ভড়কে দিতে না পারে’’

দা'য়ী ইলাল্লার চরিত্র ছিল শহীদ আব্দুল মালেকের অন্যতম গুণাবলী। তাইতো দায়িত্বের কঠিন ব্যস্ততা এবং বাস্তবতার মধ্যেও তিনি লিখতেন বেলাল এবং কামরুলকে, সচেতন করতেন তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে, সাহসী করে তুলতেন আগামীদিনের সফল নেতৃত্বের জন্য। তাইতো বেলালকে উদ্দেশ্য করে লিখেছেন, ‘‘সৃষ্টির আদি থেকে একটি শাশ্বত নিয়মের মতো এ সত্য চলে এসেছে যে, মহাপুরুষরা সত্যের প্রচার ও প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে নিজের মন-প্রাণ বিলিয়ে দিয়েছেন। নির্মম সমাজ সেই মহাপুরুষকেই কঠিন ও নির্দয়ভাবে আঘাতের পর আঘাত হেনেছে। বিদ্রুপ, লাঞ্ছনা ও গঞ্জনার এই ইতিহাস নতুন কিছু নয়। আরবের বালুকণা ও প্রস্তর কাদের তাজা খুনে রঞ্জিত হয়েছিল? ওমর, ওসমান, আলী আর হাসান-হোসাইন এর জীবন নাশের জন্য কারা দায়ী? ওমর ইবনে আব্দুল আজিজ, মুহাম্মদ ইবনে কাশিম, কোতায়বা কাদের চক্রান্তে নিহত হয়েছিলেন? ইসলামের ইতিহাস পড়ে দেখ, রক্তের লাল স্রোত শুধু কারবালায়ই শেষ হয়ে যায়নি আজো পৃথিবীর বুকে সহস্র কারবালা সৃষ্টি হচ্ছে। আজো মুসলমান ফাঁসির মঞ্চে নিজের জীবন বিলিয়ে দিচ্ছে খোদার দ্বীনকে টিকিয়ে রাখার জন্য। তোমরাতো পৃথিবী দেখনি, দেখনি মুসলমানের ওপর নির্যাতন, শোননি তাদের হাহাকার। যে ইসলামের প্রতিষ্ঠার জন্য দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ মানব নিজের জীবন তিলে তিলে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিলেন, যার জন্য হাজারো মুজাহিদের তপ্ত রক্ত পৃথিবীর মাটি লাল করে দিয়েছে, সেই ইসলামই লাঞ্ছিত হচ্ছে মুসলমানদের হাতে’’

শহীদের রক্ত কখনো বৃথা যায়না, বৃথা যেতে পারেনা। ১৯৬৯ সালের ১২ আগস্ট ইসলাম বিরোধী শক্তিরা শহীদ আব্দুল মালেককে হত্যার মাধ্যমে আন্দোলনকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে চেয়েছিল। বুমেরাং হয়েছে তাদের সকল ষড়যন্ত্র, সমুদ্রের ফেনিল ফেনার বুদবুদের মত মিলিয়ে গিয়েছে বাতাসের সাথে। শহীদ আব্দুল মালেকের শাহাদাৎ লাখ লাখ ছাত্রের হৃদয়ে জাগিয়ে দিয়েছে প্রাণের স্পন্দন।
শাহাদাতের পূর্ব মুহূর্তে ইখওয়ানুল মুসলিমিনের নেতা আব্দুল কাদের আওদাহ বলেছিলেন, ‘‘আমাদের রক্ত কথা বলবে, এ রক্ত বৃথা যাবেনা।’’
শহীদ আব্দুল মালেকের মৃত্যু সংবাদ শুনে সেদিন সাইয়্যেদ আবুল আলা মওদূদী বলেছিলেন, ‘‘আব্দুল মালেক বাংলাদেশে ইসলামী আন্দোলনের প্রথম শহীদ তবে শেষ নয়’’সেই পথ ধরে শহীদী কাফেলার শাহাদাতের সিঁড়িতে সংযোজিত হয়েছে ১৩৬টি সিঁড়ি। ১৩৬ জন শহীদসহ শহীদ আব্দুল মালেকের উত্তরসূরি ইসলামী ছাত্রশিবিরের লক্ষ কর্মী প্রস্তুতি নিচ্ছে মালেক ভাইয়ের স্বপ্ন বাস্তবায়নে। আমাদের আহবান জেগে উঠুক সেই সকল মৃত প্রাণ। তিমির রাতের শেষে জেগে উঠুক ভোরের সোনালী সূর্য।

শহীদ জননীর সেই আকুতি স্মরণ করিয়ে দিয়ে শেষ করছি,
‘‘আমার পুত্রতুল্য ইসলামী ছাত্র সংঘের তরুণ সদস্যরা আমার আন্তরিক দোয়া জেনো। জানতে পেলাম তোমাদের ভাই শহীদ আব্দুল মালেকের স্মৃতি স্মারক বের করতে যাচ্ছ। তোমাদের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়।
দুনিয়ার ধন-সম্পত্তি, টাকা-পয়সা ও নাম-যশের কোন লালসাই শহীদ আব্দুল মালেকের ছিল না। আল্লাহর দ্বীন দুনিয়ায় বুলন্দ করা তাঁর জীবনের লক্ষ্যবস্তু ছিল। এজন্য দরকার বোধে জান-মাল হাসি মুখে কুরবান করতে সে প্রস্তুত ছিল। আল্লাহপাক তোমাদেরকে সেই শক্তি দিন এবং অসমাপ্ত কাজ তোমাদের দ্বারা পূর্ণ করে দিন।
আমার স্নেহের দুলাল আব্দুল মালেক তোমাদের মধ্যে আর নেই, আছে তাঁর আদর্শটুকু। শহীদ হয়ে সে যে আদর্শ রেখে গেল বিশ্বের বুকে তোমরা সে আদর্শ অনুসরণ করে তোমাদের কর্তব্যের পথে এগিয়ে চলো। আমার এক আব্দুল মালেক গেছে তোমরা শত শত হাজার হাজার আব্দুল মালেক রয়েছো। আব্দুল মালেকের মতো তোমরা যেন হতে পার। দোয়া করি তোমাদের এ মায়ের মুখকে তোমরা উজ্জ্বল রেখো। আমি দেখতে চাই ইসলামী শিক্ষানীতিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেরা ডিগ্রি পর্যন্ত বাধ্যতামূলক হতে। এটা শুধু তোমাদের কাছে নয় সরকারের কাছেও আবেদন।

হায় আফসোস! আজ পর্যন্তও সরকারকে দেখলাম না আমার পুত্র হত্যার বিচার করতে। দেখলাম না তার উদ্দেশ্যকে বাস্তবায়িত করার পথে পা বাড়াতে। এটা কি ইসলামী রাষ্ট্র নয়? এই রাষ্ট্রে কি ইসলামের নাম নিলেই আমার পুত্রের মত অবস্থা হবে? আমি দোয়া করি। তোমাদেরকে প্রাণ ভরে আশির্বাদ করি। বাছারা তোমরাই আমার ছেলে , তোমরাই আমার আব্দুল মালেক। আব্দুল মালেকের মতই হও। আব্দুল মালেকের উদ্দেশ্য সফল করো। আমিন’’
শহীদ আব্দুল মালেক ভাইয়ের শাহাদাৎ স্মরণে প্রথম স্মারক গ্রন্থে আমাদের গর্বিত মা ছাবিরুন নেছা' তাঁর সন্তান শহীদ আব্দুল মালেকের উত্তরসূরীদের এই আশীর্বাদ দিয়ে গেছেন। সেই মা আজ জান্নাতবাসী। প্রত্যাশিত ইসলামের বিজয়তো দেখে যেতে পারেননি এমনকি যে অন্যায়ভাবে তাঁর সন্তানকে শহীদ হতে হয়েছে তার বিচারও দেখে যেতে পারেননি। তবে যে দ্বীন বিজয়ের স্বপ্ন নিয়ে বেঁচে ছিলেন এবং শহীদ আব্দুল মালেকের উত্তরসূরীদের নিজের সন্তান হিসেবে হৃদয়ে জায়গা করে দিয়েছেন তা বাস্তবায়নের দায়িত্ব তাদের। সেটিই হোক শহীদী কাফেলার সাথীদের ইসলামী শিক্ষা দিবসের প্রত্যয়।

কোন মন্তব্য নেই: