***যে ব্যক্তি আল্লাহর পরিবর্তে এমন বস্তুর পূজা করে, যে কেয়ামত পর্যন্তও তার ডাকে সাড়া দেবে না, তার চেয়ে অধিক পথভ্রষ্ট আর কে? তারা তো তাদের পুজা সম্পর্কেও বেখবর।*****আল্লাহ ছাড়া সত্য কোন উপাস্য নেই, তিনি চিরঞ্জীব, সবকিছুর ধারক। *** ওই ঈমানদারদের সাথে তাদের শত্রুতার এ ছাড়া আর কোন কারণ ছিল না যে তারা সেই আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছিল, যিনি মহাপরাক্রমশালী এবং নিজের সত্তায় নিজেই প্রশংসিত – (আল বুরুজ-৮) || যারা মুমিন পুরুষ ও নারীদের ওপর জুলুম - নিপীড়ন চালিয়েছে ,তারপর তা থেকে তওবা করেনি, নিশ্চিতভাবেই তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের আযাব এবং জ্বালা - পোড়ার শাস্তি – (আল বুরুজ-১০) || যারা ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করেছে নিশ্চিতভাবেই তাদের জন্য রয়েছে জান্নাতের বাগান যার নিম্নদেশে প্রবাহিত হতে থাকবে ঝরণাধারা৷ এটিই বড় সাফল্য – (আল বুরুজ-১১) || এই ওয়েবসাইট সম্পর্কে আপনার মতামত ও গঠনমূলক সমালোচনা জানিয়ে ই-মেইল করুন। *** হে আল্লাহ,আমাদেরকে তোমার সত্যের পথে পরিচালিত কর। আমাদের সম্মুখে তোমার পথ সহজ ও সরল করে দাও। আমীন...!

শনিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০১০

সবাই বলে শিবির নাকি খুব খারাপ

ছেলেগুলো মাঝে মাঝে আসে। হাসি হাসি মুখ, কথাবলে বিনয়াবনত হয়ে। ওদের কেউ কলেজে পড়ে কেউবা স্কুলের ওপরের ক্লাসের ছাত্র।
অনেকেই বলে ছেলেগুলো খুব খারাপ, যদিও আমি কথাগুলো বিশ্বাস করার মতো কোন যুক্তি খুঁজে পাই না। এ বয়সে আর দশটি ছেলের সাথে কিছুতেই ওদেরকে মেলাতে পারি না। আজকালকার ছেলেদের মুখ থেকে সিগারেটের অসহ্য গন্ধ আসার কথা, কিন্তু ওদের কাছ থেকে তাও আসে না। আগেরকার সময়েই এমন একটি ছেলেও পাওয়া যেত না যারা বিড়ি-সিগারেট খেয়ে মুখের দুর্গন্ধ ছড়াতো না, সকল ভালো-খারাপ বন্ধুরা সিগারেট খাওয়াকে ব্যক্তিত্ব হিসেবে জ্ঞান করতো। আর এখনকার যুগের ছেলেরা নেশা করবে, হিরোইন নেবে, এটাই স্বাভাবিক। অথচ ওদেরকে যাবতীয় নেশা থেকে মুক্ত বলেই সমাজের সবাই জানে, তবে কি করে ওদেরকে আমি খারাপ ভাবি?

একটা সময় ছিল, নকলের মহোৎসব হতো স্কুল-কলেজ-মাদরাসায়। এখন কিছুটা কমলেও একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে তা বলা যাবে না, কিন্তু এ ছেলেদের সম্পর্কে খবর নিয়ে জেনেছি, নিয়মিত লেখাপড়া করে এবং পরীক্ষায় নকল করাকে এরা গুণাহ মনে করে, তাই এদের কেউ নকলের ধারে কাছেও ঘেষে না। তাহলে একজন ছাত্রকে কি করে মন্দ বলি যখন ওরা লেখাপড়ায় দারুণ হিসেবী।


চারিদিকে অশ্লীলতার হাতছানি, যুব সমাজ হারিয়ে যাচ্ছে অশ্লীলতার মহাসমুদ্রে। যার একটি মেয়ে আছে তাকে স্কুলে পাঠিয়ে মা-বাবাদের চিন্তায় থাকতে হয়, মেয়েটি আবার বখাটেদের দ্বারা ধর্ষিতা হবে না তো? অশ্লীলতার এ মহাউৎসব থেকেও নিজেদেরকে সম্পূর্ণ আলাদা রেখেছে এ ছেলেগুলো। ওরা নিজেদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে, অশ্লীলতার কাছেও ঘেষে না, এমনকি মেয়েদের সাথে প্রেম-পরিণয়কে ওরা কবীরা গুণাহ মনে করে, তাহলে একজন মেয়ের বাবা হিসেবে আমাদের তো চাওয়া উচিত বাংলার প্রতিটি ছেলেরা ওদের মতো হোক। অশ্লীলতার এ যুগে যারা নিজেদের চরিত্রকে রাখে পুতপবিত্র, তাদেরকে খারাপ ছেলে বলি কোন সাহসে?


একটা সময় ছিল, সকালে প্রতিটি ঘর থেকে ভেসে আসতো পবিত্র কোরআনের বাণী। এতিটি পাড়ার মসজিদে, মক্তবে ছেলে মেয়েরা গলা মিলিয়ে পড়তো আলিফ, বা, তা, ছা। অথচ ইদানিং মসজিদগুলোতেও আর কোরানের প্রশিক্ষণ দেখা যায় না। আগে মসজিদের ইমামরা সওয়াবের আশায় বা বাড়তি আয়ের জন্য কোরআন শেখাতো, অথচ আজ তারা ছুটছে বিভিন্ন বীমা আর এনজিওর পিছে, কোরআনের আলো থেকে বঞ্চিত হচ্চে পুরো দেশ। অথচ এর মাঝেও এ ছেলেগুলো নিয়মিত কোরআন অধ্যয়ন করে, হাদীস পড়ে, ইসলামকে জানার জন্য ইসলামী সাহিত্য পড়ে, নিয়মিত জামায়াতে নামাজ পড়ে এমনকি গভীর রাতে এক আল্লাহর কাছে মাথা নত করে। এতসব গুণ থাকার পরও যদি বলি ছেলেগুলো খারাপ, তবে খারাপের সংজ্ঞাই পাল্টাতে হবে বৈকি।


অনেকেই বলেন, আরে জানেন না, ওরা নামাজ রোজা করলে কি হবে, ওরা তো শিবির করে। শিবিরের চেয়ে বড় দোষ আর কি হতে পারে? কিন্তু আমি ভাবি, শিবিরের মতো একটা দোষ যদি তাদের মাঝে হাজারো সৎগুণাবলীর সমাবেশ ঘটাতে পারে, তবে দেশের প্রতিটি সন্তানকেই শিবিরের মত্র খারাপ কাজটি ফরজ মনে করে করা উচিৎ।


যদি ধরে নেই শিবির খুব খারাপ, একেবারে গরুর গোবরের মতো, তবে জানা উচিত গোবরের মতো ভালো জৈবসার আর কিছুই নেই। দেশের প্রতি পরিবারের গোলাপ বাগানে শিবিরের মতো জৈবসার প্রয়োগ করা উচিত তাহলেই বাগানে ফুটবে রঙবেরঙের বাহারী ফুল।
তবে কেন আর চোখ বন্ধ করে রাখো, মনের জানালা খোল, আগাছামুক্ত সমাজ গড়তে শিবির নামের খারাপ সংগঠনে ঝাপিয়ে পড়।

কোন মন্তব্য নেই: