শহীদ নং-৯
নাম: মো: আজিবর রহমান
সাংগঠনিক মান: সাথী
শহীদ হওয়ার তারিখ: ৭ মে ১৯৯২
পিতার নাম: মো: আবেদ আলী
সর্বশেষ পড়াশুনা: ১ম বর্ষ সম্মান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ।
জীবনের লক্ষ্য: বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়া।
আহত হওয়ার স'ান: বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী বুধপাড়া।
আঘাতের ধরন: শক্তিশালী বোমার আঘাতে ঝলসে যায় শহীদের গোটা শরীর।
কাদের আঘাতে শহীদ: জাসদ, ছাত্রমৈত্রী।
স্থায়ী ঠিকানা: গ্রাম: বুধপাড়া, ডাক: হরিয়ান চিনিকল, থানা: মতিহার, জেলা: রাজশাহী।
ভাইবোন : ৫ জন।
ভাই-বোনদের মাঝে অবস্থান : ২য়।
পরিবারের মোট সদস্য: ৯ জন।
পিতা: জীবিত, পেশা: চাকুরী।
মাতা: জীবিত, পেশা: গৃহিণী।
শহীদ হওয়ার পূর্বে স্মরণীয় বাণী: “ইসলামী বিপ্ল্লব ছাড়া এ সমাজের পরিবর্তন সম্ভব নয়।”
শাহাদতের পর শহীদের পিতা-মাতার প্রতিক্রিয়া: “আজিবর ইসলামের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছে। আল্ল্লাহ তাকে জান্নাতবাসী করুন।”
নাম: মো: আজিবর রহমান
সাংগঠনিক মান: সাথী
শহীদ হওয়ার তারিখ: ৭ মে ১৯৯২
পিতার নাম: মো: আবেদ আলী
সর্বশেষ পড়াশুনা: ১ম বর্ষ সম্মান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ।
জীবনের লক্ষ্য: বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়া।
আহত হওয়ার স'ান: বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী বুধপাড়া।
আঘাতের ধরন: শক্তিশালী বোমার আঘাতে ঝলসে যায় শহীদের গোটা শরীর।
কাদের আঘাতে শহীদ: জাসদ, ছাত্রমৈত্রী।
স্থায়ী ঠিকানা: গ্রাম: বুধপাড়া, ডাক: হরিয়ান চিনিকল, থানা: মতিহার, জেলা: রাজশাহী।
ভাইবোন : ৫ জন।
ভাই-বোনদের মাঝে অবস্থান : ২য়।
পরিবারের মোট সদস্য: ৯ জন।
পিতা: জীবিত, পেশা: চাকুরী।
মাতা: জীবিত, পেশা: গৃহিণী।
শহীদ হওয়ার পূর্বে স্মরণীয় বাণী: “ইসলামী বিপ্ল্লব ছাড়া এ সমাজের পরিবর্তন সম্ভব নয়।”
শাহাদতের পর শহীদের পিতা-মাতার প্রতিক্রিয়া: “আজিবর ইসলামের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছে। আল্ল্লাহ তাকে জান্নাতবাসী করুন।”
সারা দেশব্যাপী ইসলামী আন্দোলনের অগ্রযাত্রাকে স-ব্ধ করার হীন স্বার্থে ভারতীয় দালাল এবং তাদের দোসররা সন্ত্রাস, হত্যা, যখম, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের যে তান্ডব চালিয়ে যাচ্ছিল রাজশাহীর এ ঘটনা তারই অংশ বিশেষ। দেশব্যাপী সন্ত্রাসের অংশ হিসাবে তারা ৭ জুলাই ৯২ অত্যন- পৈশাচিক কায়দায় হত্যা করল শিবির নেতা আজিবর রহমানকে। হত্যা আর মিথ্যার ধ্বজাধারী জাসদ, মৈত্রী, ছাত্রলীগ, ছাত্র ইউনিয়ন ও তাদের সহযোগী সংগঠন ছাত্রদল শিবিরের আদর্শের কাছে নতি স্বীকার করে অস্ত্র তুলে নিয়ে তাদের হিংস্র চরিত্র তুলে ধরল শহীদ আজিবরকে খুন করে। খুনী চক্ররা ’৮৮’র ১৮ নভেম্বর শিবির কর্মী আসগরকে হত্যা করে তাকে নিজেদের কর্মী বলে দাবি করে এবং হত্যার দায়-দায়িত্ব শিবিরের ওপর চাপানোর ব্যর্থ চেষ্টা চালায়। ৯০ এর ২২ জুন শিবির নেতা খলিলুর রহমানকে হত্যা করে গোয়েবলসীয় কায়দায় মিথ্যা প্রচারণা চালায় নিজেদের কর্মী বলে। এমনকি তারা শিবির নেতা-কর্মীদের ওপর হত্যা মামলা দায়ের করে যা পরবর্তীতে তদনে- মিথ্যা প্রতিপন্ন হয়।
এখানেই শেষ নয়, ’৯২ এর ১৭ মার্চ পুলিশের গুলিতে জাসদ কর্মী পিটু নিহত হয়েছে বলে সরকার ও পুলিশ স্বীকার করলেও তারা শিবির নেতাদের ওপর পিটু হত্যার মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপন করে। এমনিভাবে হত্যা ও মিথ্যার আশ্রয় গ্রহণকারী খুনী সন্ত্রাসীরা খেয়াল খুশী মত ক্যাম্পাসে হত্যার সাম্রাজ্য সৃষ্টি করে। খুনী চক্রের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট মামলা থাকা সত্ত্বেও পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। ফলে দিন দিন সন্ত্রাসীদের স্পর্ধা ও খুনের পিপাসা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পায়। আর ঐ সমস- খুনীদের উস্কিয়ে দিলেন তৎকালীন আওয়ামী সভানেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি ’৯২র ৬ জুলাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও মহানগরীতে এক জনসভায় প্রকাশ্যভাবে জামায়াত শিবিরকে নির্মুলের উদাত্ত আহবান জানালেন। উক্ত নেত্রীর ঘোষণার ২৪ ঘন্টা অতিবাহিত হতে না হতেই খুনী চক্ররা বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী গ্রাম বুধপাড়ায় আক্রমণ চালিয়ে হত্যা করল শিবির নেতা, সম্ভাবনাময় তরুণ নেতা আজিবর রহমানকে।
ঘটনার দিন ৭ই জুলাই। সন্ধ্যার পর শহীদ আজিবর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিবির নেতা মোজাম্মেল হকের বাড়িতে পড়াতে গিয়েছিলেন। একই কক্ষে পড়াশুনায় ব্রত ছিল খোরশেদ আলম। ওঁত পেতে থাকা সন্ত্রাসীদের শক্তিশালী হাতবোমা গ্রীল বিহীন জানালা দিয়ে আজিবর রহমানের গায়ে আঘাত হানে। সঙ্গে সঙ্গে আজিবর রহমানের সমস- শরীর ঝলসে যায় ও খোরশেদ আলম মারাত্মক ভাবে আহত হয়ে জ্ঞান হারায়। সন্ত্রাসীরা তাদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে পালিয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে আহত দু’জনকেই রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাত ১১-৪৫ মিনিটে শিবির নেতা শহীদ আজিবর রহমান তার প্রিয় মনিবের ডাকে সাড়া দিয়ে ইনে-কাল করেন। (ইন্নালিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজেউন)।
এখানেই শেষ নয়, ’৯২ এর ১৭ মার্চ পুলিশের গুলিতে জাসদ কর্মী পিটু নিহত হয়েছে বলে সরকার ও পুলিশ স্বীকার করলেও তারা শিবির নেতাদের ওপর পিটু হত্যার মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপন করে। এমনিভাবে হত্যা ও মিথ্যার আশ্রয় গ্রহণকারী খুনী সন্ত্রাসীরা খেয়াল খুশী মত ক্যাম্পাসে হত্যার সাম্রাজ্য সৃষ্টি করে। খুনী চক্রের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট মামলা থাকা সত্ত্বেও পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। ফলে দিন দিন সন্ত্রাসীদের স্পর্ধা ও খুনের পিপাসা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পায়। আর ঐ সমস- খুনীদের উস্কিয়ে দিলেন তৎকালীন আওয়ামী সভানেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি ’৯২র ৬ জুলাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও মহানগরীতে এক জনসভায় প্রকাশ্যভাবে জামায়াত শিবিরকে নির্মুলের উদাত্ত আহবান জানালেন। উক্ত নেত্রীর ঘোষণার ২৪ ঘন্টা অতিবাহিত হতে না হতেই খুনী চক্ররা বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী গ্রাম বুধপাড়ায় আক্রমণ চালিয়ে হত্যা করল শিবির নেতা, সম্ভাবনাময় তরুণ নেতা আজিবর রহমানকে।
ঘটনার দিন ৭ই জুলাই। সন্ধ্যার পর শহীদ আজিবর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিবির নেতা মোজাম্মেল হকের বাড়িতে পড়াতে গিয়েছিলেন। একই কক্ষে পড়াশুনায় ব্রত ছিল খোরশেদ আলম। ওঁত পেতে থাকা সন্ত্রাসীদের শক্তিশালী হাতবোমা গ্রীল বিহীন জানালা দিয়ে আজিবর রহমানের গায়ে আঘাত হানে। সঙ্গে সঙ্গে আজিবর রহমানের সমস- শরীর ঝলসে যায় ও খোরশেদ আলম মারাত্মক ভাবে আহত হয়ে জ্ঞান হারায়। সন্ত্রাসীরা তাদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে পালিয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে আহত দু’জনকেই রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাত ১১-৪৫ মিনিটে শিবির নেতা শহীদ আজিবর রহমান তার প্রিয় মনিবের ডাকে সাড়া দিয়ে ইনে-কাল করেন। (ইন্নালিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজেউন)।
শহীদ আজিবর রহমান: একটি বিপ্ল্লবী আদর্শ
মোঃ জালাল উদ্দিন
শহীদি কাফেলা বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের এক তরুণ পথিক শহীদ আজিবর রহমান। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামী আন্দোলনের মুজাহিদদের মধ্যে উজ্জ্বল এক নাম আজিবর রহমান। তিনি ইসলামী আন্দোলনকে প্রাণ দিয়ে ভালবাসতেন। সংগঠন ও নিজের সত্তাকে তিনি এক করে ভাবতেন। খাঁটি মুসলমান ও ইসলামী আন্দোলনের মর্দে মুজাহিদ রূপে গড়ে না উঠলে এ জীবন বৃথা বলে তিনি মনে করতেন। বাল্যকাল থেকেই তিনি সংগঠনের দাওয়াত পেয়েছিলেন এবং এই দাওয়াত ও বিশ্বাসে ইসলামী আন্দোলনের কঠিন পথে তিনি যেমন অগ্রসর হয়েছিলেন তেমনি অকৃত্রিম ভাবে ভালবেসেছিলেন সংগঠনকে। তাই তিনি ব্যক্তিগত কাজের চেয়ে সংগঠনের কাজকে বেশি প্রাধান্য দিতেন।
শহীদ আজিবর রহমান ঐতিহ্যবাহী শহীদি ঈদগাহ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী এলাকা বুধপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। শহীদ আজিবরের পিতা জনাব মোঃ আবেদ আলী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আমীর আলী হলের একজন সাধারণ কর্মচারী। তিনি তাঁর আদরের সন-ান আজিবরকে অনেক দুঃখকষ্ট সহ্য করে বড় করে তুলেছিলেন। ছেলে উচ্চ শিক্ষিত হোক এটাই ছিল তাঁর পিতার কামনা। শহীদ আজিবর রহমান তাঁর পিতার এই স্বপ্নকে বাস-বে রূপায়িত করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন। তিনি ছিলেন বাবা মায়ের আদরের সন-ান। শহীদ আজিবরের ভাই-বোনদের সাথে খুব মধুর সম্পর্ক পরিলক্ষিত হত। কেউ তার বিরুদ্ধে কোন খারাপ মন-ব্য করতেন না।
শহীদ আজিবর রহমান ছিলেন আমার সবচেয়ে কাছের ব্যক্তি। ছাত্র জীবনে আমি শহীদ আজিবরের সাথে যত সময় দিয়েছি অন্য কেউ হয়তো তত সময় তার সাথে কাটাতে পারেনি। আজিবর ভাইয়ের সাথে আমার সর্ব প্রথম
সাক্ষাত হয় রাজশাহী মাসকাটা দীঘি হাইস্কুল-এর ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে। আমাদের স্কুলে ক্লাস শুরু হবার প্রথমে লাইন ধরে জাতীয় সঙ্গীত গাইতে হতো। জাতীয় সঙ্গীতের পূর্বে কুরআন তিলাওয়াত হতো। জাতীয় সঙ্গীতের ঐ অনুষ্ঠানে তিনি প্রতিদিন কুরআন তিলাওয়াত করতেন। তার এই তিলাওয়াত আমাকে আকৃষ্ট করেছিল। মাঝে মাঝে অর্থসহ তিলাওয়াত করতেন। তার এই তিলাওয়াত আমার মধ্যে আগ্রহের জন্ম দিয়েছিল। আমি যদি একদিন আজিবর ভাইয়ের মত তিলাওয়াত করতে পারতাম। অবশেষে একদিন দেখা গেল আজিবর ভাই নেই তাই শিক্ষকরা তিলাওয়াতের জন্য যে কোন একজনকে ডাকলেন। কেউ যেতে চাচ্ছিল না, সেদিন আমি গিয়ে তিলাওয়াত করেছিলাম। শহীদ আজিবর ভাইয়ের সাথে আমার বেশি মেশার সুযোগ হয়েছিল। ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে পড়াশুনা করে একই সঙ্গে এস এস সি পরীক্ষা দিয়েছিলাম। তার পর দুজনই ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল এন্ড কলেজে পড়াশুনা করি। ১৯৯০ সালে এইচ এস সি পাস করার পর দুজনই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বি এস এস (সম্মান) রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ১ম বর্ষে ভর্তি হই। ১৯৯২ সালের ফেব্রুয়ারীতে ৯১-৯২ সেশন। ক্লাস করার পর ১ম বর্ষ (সম্মান) ৬ জুলাই পরীক্ষার আগেই শহীদ আজিবর ভাইকে আমরা হারিয়েছি। আজকে যখন শহীদ আজিবরের বিষয়ে লিখছি তখন শহীদ আজিবরের কত শত স্মৃতি কথা মনে পড়ছে।
শহীদ আজিবর রহমান শহীদ হন ১৯৯২ সালের ৭ জুলাই। তিনি যখন পাশের বাড়িতে নিজে পড়ছিলেন এবং ছোট একটি ছেলেকে পড়াচ্ছিলেন তখন জাসদ (ছাত্রলীগের) পাষন্ড, বর্বর সন্ত্রাসীরা বাড়ির বাইরে থেকে তার উপর শক্তিশালী বোমা হামলা করে। পাষন্ডরা এভাবে হামলা করবে তা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। ঐ দিনই শহীদ আজিবর ভাই শাহাদাত বরণ করেন। যে বাড়িতে হামলা করেছিল সেই বাড়িটিও বিধ্বস- হয়েছিল। শহীদ আজিবর ভাইয়ের জানাযা হয়েছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে। সেখানে হাজার হাজার লোক জানাযায় অংশ গ্রহণ করেছিল এবং সকলের মাঝেই কান্নার রোল পড়েছিল। তারপর দ্বিতীয় জানাযা হয়েছিল তাঁর নিজ জন্মস'ান বুধপাড়া গ্রামে। আজিবর ভাইয়ের লাশ দেখার জন্য এত মানুষের আগমন ঘটেছিল যা ইতিপূর্বে কখনও দেখিনি। সেদিন এলাকাবাসীর মুখে শুনেছিলাম, “আজকে আমরা একজন প্রতিভাবান ছাত্রকে হারালাম, আমাদের এ ক্ষতি পূরণীয় নয়।”
শহীদ আজিবর ভাই ছিলেন সংগঠনের জন্য নিবেদিত প্রাণ। তিনি সংগঠনকে প্রসারিত করা এবং সংগঠনের মজবুতি অর্জনের জন্য সব সময় সচেষ্ট ছিলেন। সংগঠনের দাওয়াতী কাজে বেশ তৎপর ছিলেন। মেধাবী ও প্রভাব সম্পন্ন প্রতিভাবান ছাত্ররাই ছিল তাঁর টার্গেট। ছাত্রদেরকে সংগঠনে নিয়ে আসার জন্য তিনি প্রকাশনীর বিভিন্ন সামগ্রী উপহার দিতেন। ছাত্রদের ইসলামী সাহিত্য পড়ানোর ব্যাপারে কার্যকরী ভূমিকা রাখতেন। মোট কথা ব্যক্তিগত কাজের চাইতে সংগঠনের কাজকেই তিনি বেশি প্রাধান্য দিতেন। সংগঠনের সামান্য দায়িত্বও অত্যন- সুনিপুনভাবে, আন-রিকতার সাথে পালন করতেন। সংগঠনের আনুগত্যের ব্যাপারে খুব সচেতন ছিলেন। আমি দেখেছি সংগঠন তাকে যখন যে দায়িত্ব দিয়েছে তিনি তা গুরুত্বের সাথে পালন করেছেন। সে আমাকে এভাবে বুঝিয়েছেন যে, “আনুগত্য ছাড়া নেতৃত্ব ও সংগঠন চলতে পারে না। আনুগত্যহীন সহস্র কর্মীর চেয়ে আনুগত্যশীল একজন কর্মীই আন্দোলনের জন্য উত্তম।” তার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনের জন্য এতই যত্নবান ছিলেন যে, সংগঠনের সামান্য কাজ থেকে বড় কোন দায়িত্ব সবই ছিল তাঁর কাছে সমান। বড় কোন দায়িত্ব আসলে সেটাকে তিনি আমানত মনে করতেন।
ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের একটি বিশেষ গুণ হল আত্মসমালোচনার মাধ্যমে নিজকে পর্যায়ক্রমে পূর্ণতার দিকে নিয়ে যাওয়া। আত্মসমালোচনার কঠিন সাধনার মাধ্যমে শহীদ আজিবর নিজের চরিত্রকে আরও উন্নত করতে প্রয়াস পেয়েছিলেন।
তিনি সংগঠনের সাথী ছিলেন। একদিকে কোমল মেজাজের অধিকারী, অপর দিকে ছিলেন কঠোর। তিনি সকলের সাথে হাসি মুখে কথা বলতেন। তার সুন্দর কথার মাধ্যমে মানুষকে অতি সহজেই আকৃষ্ট করা সম্ভব হত। অপর দিকে সংগঠনের কাজে আলস্য ভাব ও দায়িত্বানুভূতির অভাব তিনি সহ্য করতে পারতেন না। কর্মীদেরকে ভালবাসতেন। শহীদ আজিবর ছিলেন তাদের দুঃখ বেদনার সাথী। তাঁর এই আন-রিকতার জন্য অনেক কর্মীর কাছে তিনি ছিলেন অভিভাবকের মত। কর্মীদের সাথে দেখা হলেই কুশলাদি জিজ্ঞাসা করতেন। পড়াশুনার খোজ খবর নিতেন। কর্মীর যোগ্যতাকে সামনে রেখে উপদেশ দিতেন। অনুপ্রেরণা যোগাতেন প্রতিভা বিকাশে। এ কারণেই কর্মীদের কাছে আজিবর ভাই একজন দায়িত্বশীলের পাশাপাশি অভিভাবকও ছিলেন। শহীদ আজিবর নিজকে ইসলামী আন্দোলনের যোগ্য কর্মী হিসাবে গড়ে তুলতে সজাগ ছিলেন। কখনও মাদ্রাসায় পড়াশুনা করেননি। তবুও কুরআন হাদীস সম্পর্কে তাঁর ভাল জ্ঞান ছিল। কুরআন পড়তে পারে না এমন অনেক কর্মীকে কুরআন শিক্ষা দিয়েছিলেন। শহীদ আজিবরের মধ্যে সংগঠনের সদস্য হবার প্রবল আগ্রহ ছিল। অল্প দিনের ব্যাবধানেই তিনি সংগঠনের সদস্য হতে পারতেন। শহীদ আজিবর ছিলেন অসাধারণ সাহসের অধিকারী। আল্ল্লাহকে ছাড়া আর কাউকে ভয় করতেন না। বাতিল শক্তির বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন কঠিন। সংগঠনের কঠিন মুহুর্তে যে কোন জটিল সিদ্ধান- গৃহীত হলে সেই সিদ্ধান- বাস-বায়নে তিনি প্রথম শ্রেণীর অগ্রপথিক ছিলেন। আজিবর ভাই প্রায়ই বলতেন, “মৃত্যুর ফায়সালা আসমানে হয়, জমিনে হয় না। এক মর্দে মুজাহিদ বিশ জন কাফেরের সাথে লড়াইয়ে যথেষ্ট।” তিনি আল্ল্লাহর প্রতি অত্যন- আস'া স'াপন করতেন।
শহীদ আজিবরের সব কিছু ছিল পরিচ্ছন্ন। কাজ ছিল নিয়ম বাঁধা। তাঁর হাতের লেখা ছিল খুব সুন্দর। ভারসম্যপূর্ণ জীবন কাটিয়েছেন তিনি। যদিও শহীদ আজিবরের থাকার রুমটি উন্নতমানের ছিল না তবুও রুমটিকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতেন। বই-পুস-কগুলি খুব সুন্দর করে গুছিয়ে রাখতেন। ব্যবহারের জামা কাপড় ভালভাবে গুছিয়ে রাখতেন। কোন দোকানে বাকি খেতে পছন্দ করতেন না। কাউকে কোন কথা দিলে কথা রক্ষার আপ্রাণ চেষ্টা করতেন। মিথ্যা বলা থেকে সব সময় দূরে থাকতেন। গীবত ও চোগলখোরী করাকে একেবারেই অপছন্দ করতেন। আত্মপূজা ও অহংকার থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করতেন।
শহীদ আজিবর রহমান ছিলেন উন্নত চরিত্রের আধিকারী। অত্যন- বিনয়ী ও মিষ্টভাষী ছিলেন। তাঁর উন্নত চরিত্র ও ব্যক্তিত্ব সবাইকে মুগ্ধ করেছিল। এজন্যই বলা যায় শহীদ আজিবর রহমান একটি বিপ্ল্লবী আদর্শ। শহীদ আজিবরের মধ্যে আমরা অনেক বিপ্লবী আদর্শ দেখতে পাই। ইসলামী আন্দোলনের কর্মীরা যদি এসব আদর্শ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে তাহলে এই আদর্শগুলি ইসলামী আন্দোলনেরই পুঞ্জিভূত সম্পদ হিসাবে ইসলামী বিপ্ল্লবকে ত্বরান্বিত করবে। ইনশাআল্ল্লাহ।
(লেখকঃ অধ্যাপক, আইডিয়াল কলেজ, রাজশাহী ও সাবেক সভাপতি, শহীদ শফিকুল ইসলাম উপশাখা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়)
শহীদ আজিবর রহমান ঐতিহ্যবাহী শহীদি ঈদগাহ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী এলাকা বুধপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। শহীদ আজিবরের পিতা জনাব মোঃ আবেদ আলী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আমীর আলী হলের একজন সাধারণ কর্মচারী। তিনি তাঁর আদরের সন-ান আজিবরকে অনেক দুঃখকষ্ট সহ্য করে বড় করে তুলেছিলেন। ছেলে উচ্চ শিক্ষিত হোক এটাই ছিল তাঁর পিতার কামনা। শহীদ আজিবর রহমান তাঁর পিতার এই স্বপ্নকে বাস-বে রূপায়িত করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন। তিনি ছিলেন বাবা মায়ের আদরের সন-ান। শহীদ আজিবরের ভাই-বোনদের সাথে খুব মধুর সম্পর্ক পরিলক্ষিত হত। কেউ তার বিরুদ্ধে কোন খারাপ মন-ব্য করতেন না।
শহীদ আজিবর রহমান ছিলেন আমার সবচেয়ে কাছের ব্যক্তি। ছাত্র জীবনে আমি শহীদ আজিবরের সাথে যত সময় দিয়েছি অন্য কেউ হয়তো তত সময় তার সাথে কাটাতে পারেনি। আজিবর ভাইয়ের সাথে আমার সর্ব প্রথম
সাক্ষাত হয় রাজশাহী মাসকাটা দীঘি হাইস্কুল-এর ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে। আমাদের স্কুলে ক্লাস শুরু হবার প্রথমে লাইন ধরে জাতীয় সঙ্গীত গাইতে হতো। জাতীয় সঙ্গীতের পূর্বে কুরআন তিলাওয়াত হতো। জাতীয় সঙ্গীতের ঐ অনুষ্ঠানে তিনি প্রতিদিন কুরআন তিলাওয়াত করতেন। তার এই তিলাওয়াত আমাকে আকৃষ্ট করেছিল। মাঝে মাঝে অর্থসহ তিলাওয়াত করতেন। তার এই তিলাওয়াত আমার মধ্যে আগ্রহের জন্ম দিয়েছিল। আমি যদি একদিন আজিবর ভাইয়ের মত তিলাওয়াত করতে পারতাম। অবশেষে একদিন দেখা গেল আজিবর ভাই নেই তাই শিক্ষকরা তিলাওয়াতের জন্য যে কোন একজনকে ডাকলেন। কেউ যেতে চাচ্ছিল না, সেদিন আমি গিয়ে তিলাওয়াত করেছিলাম। শহীদ আজিবর ভাইয়ের সাথে আমার বেশি মেশার সুযোগ হয়েছিল। ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে পড়াশুনা করে একই সঙ্গে এস এস সি পরীক্ষা দিয়েছিলাম। তার পর দুজনই ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল এন্ড কলেজে পড়াশুনা করি। ১৯৯০ সালে এইচ এস সি পাস করার পর দুজনই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বি এস এস (সম্মান) রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ১ম বর্ষে ভর্তি হই। ১৯৯২ সালের ফেব্রুয়ারীতে ৯১-৯২ সেশন। ক্লাস করার পর ১ম বর্ষ (সম্মান) ৬ জুলাই পরীক্ষার আগেই শহীদ আজিবর ভাইকে আমরা হারিয়েছি। আজকে যখন শহীদ আজিবরের বিষয়ে লিখছি তখন শহীদ আজিবরের কত শত স্মৃতি কথা মনে পড়ছে।
শহীদ আজিবর রহমান শহীদ হন ১৯৯২ সালের ৭ জুলাই। তিনি যখন পাশের বাড়িতে নিজে পড়ছিলেন এবং ছোট একটি ছেলেকে পড়াচ্ছিলেন তখন জাসদ (ছাত্রলীগের) পাষন্ড, বর্বর সন্ত্রাসীরা বাড়ির বাইরে থেকে তার উপর শক্তিশালী বোমা হামলা করে। পাষন্ডরা এভাবে হামলা করবে তা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। ঐ দিনই শহীদ আজিবর ভাই শাহাদাত বরণ করেন। যে বাড়িতে হামলা করেছিল সেই বাড়িটিও বিধ্বস- হয়েছিল। শহীদ আজিবর ভাইয়ের জানাযা হয়েছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে। সেখানে হাজার হাজার লোক জানাযায় অংশ গ্রহণ করেছিল এবং সকলের মাঝেই কান্নার রোল পড়েছিল। তারপর দ্বিতীয় জানাযা হয়েছিল তাঁর নিজ জন্মস'ান বুধপাড়া গ্রামে। আজিবর ভাইয়ের লাশ দেখার জন্য এত মানুষের আগমন ঘটেছিল যা ইতিপূর্বে কখনও দেখিনি। সেদিন এলাকাবাসীর মুখে শুনেছিলাম, “আজকে আমরা একজন প্রতিভাবান ছাত্রকে হারালাম, আমাদের এ ক্ষতি পূরণীয় নয়।”
শহীদ আজিবর ভাই ছিলেন সংগঠনের জন্য নিবেদিত প্রাণ। তিনি সংগঠনকে প্রসারিত করা এবং সংগঠনের মজবুতি অর্জনের জন্য সব সময় সচেষ্ট ছিলেন। সংগঠনের দাওয়াতী কাজে বেশ তৎপর ছিলেন। মেধাবী ও প্রভাব সম্পন্ন প্রতিভাবান ছাত্ররাই ছিল তাঁর টার্গেট। ছাত্রদেরকে সংগঠনে নিয়ে আসার জন্য তিনি প্রকাশনীর বিভিন্ন সামগ্রী উপহার দিতেন। ছাত্রদের ইসলামী সাহিত্য পড়ানোর ব্যাপারে কার্যকরী ভূমিকা রাখতেন। মোট কথা ব্যক্তিগত কাজের চাইতে সংগঠনের কাজকেই তিনি বেশি প্রাধান্য দিতেন। সংগঠনের সামান্য দায়িত্বও অত্যন- সুনিপুনভাবে, আন-রিকতার সাথে পালন করতেন। সংগঠনের আনুগত্যের ব্যাপারে খুব সচেতন ছিলেন। আমি দেখেছি সংগঠন তাকে যখন যে দায়িত্ব দিয়েছে তিনি তা গুরুত্বের সাথে পালন করেছেন। সে আমাকে এভাবে বুঝিয়েছেন যে, “আনুগত্য ছাড়া নেতৃত্ব ও সংগঠন চলতে পারে না। আনুগত্যহীন সহস্র কর্মীর চেয়ে আনুগত্যশীল একজন কর্মীই আন্দোলনের জন্য উত্তম।” তার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনের জন্য এতই যত্নবান ছিলেন যে, সংগঠনের সামান্য কাজ থেকে বড় কোন দায়িত্ব সবই ছিল তাঁর কাছে সমান। বড় কোন দায়িত্ব আসলে সেটাকে তিনি আমানত মনে করতেন।
ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের একটি বিশেষ গুণ হল আত্মসমালোচনার মাধ্যমে নিজকে পর্যায়ক্রমে পূর্ণতার দিকে নিয়ে যাওয়া। আত্মসমালোচনার কঠিন সাধনার মাধ্যমে শহীদ আজিবর নিজের চরিত্রকে আরও উন্নত করতে প্রয়াস পেয়েছিলেন।
তিনি সংগঠনের সাথী ছিলেন। একদিকে কোমল মেজাজের অধিকারী, অপর দিকে ছিলেন কঠোর। তিনি সকলের সাথে হাসি মুখে কথা বলতেন। তার সুন্দর কথার মাধ্যমে মানুষকে অতি সহজেই আকৃষ্ট করা সম্ভব হত। অপর দিকে সংগঠনের কাজে আলস্য ভাব ও দায়িত্বানুভূতির অভাব তিনি সহ্য করতে পারতেন না। কর্মীদেরকে ভালবাসতেন। শহীদ আজিবর ছিলেন তাদের দুঃখ বেদনার সাথী। তাঁর এই আন-রিকতার জন্য অনেক কর্মীর কাছে তিনি ছিলেন অভিভাবকের মত। কর্মীদের সাথে দেখা হলেই কুশলাদি জিজ্ঞাসা করতেন। পড়াশুনার খোজ খবর নিতেন। কর্মীর যোগ্যতাকে সামনে রেখে উপদেশ দিতেন। অনুপ্রেরণা যোগাতেন প্রতিভা বিকাশে। এ কারণেই কর্মীদের কাছে আজিবর ভাই একজন দায়িত্বশীলের পাশাপাশি অভিভাবকও ছিলেন। শহীদ আজিবর নিজকে ইসলামী আন্দোলনের যোগ্য কর্মী হিসাবে গড়ে তুলতে সজাগ ছিলেন। কখনও মাদ্রাসায় পড়াশুনা করেননি। তবুও কুরআন হাদীস সম্পর্কে তাঁর ভাল জ্ঞান ছিল। কুরআন পড়তে পারে না এমন অনেক কর্মীকে কুরআন শিক্ষা দিয়েছিলেন। শহীদ আজিবরের মধ্যে সংগঠনের সদস্য হবার প্রবল আগ্রহ ছিল। অল্প দিনের ব্যাবধানেই তিনি সংগঠনের সদস্য হতে পারতেন। শহীদ আজিবর ছিলেন অসাধারণ সাহসের অধিকারী। আল্ল্লাহকে ছাড়া আর কাউকে ভয় করতেন না। বাতিল শক্তির বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন কঠিন। সংগঠনের কঠিন মুহুর্তে যে কোন জটিল সিদ্ধান- গৃহীত হলে সেই সিদ্ধান- বাস-বায়নে তিনি প্রথম শ্রেণীর অগ্রপথিক ছিলেন। আজিবর ভাই প্রায়ই বলতেন, “মৃত্যুর ফায়সালা আসমানে হয়, জমিনে হয় না। এক মর্দে মুজাহিদ বিশ জন কাফেরের সাথে লড়াইয়ে যথেষ্ট।” তিনি আল্ল্লাহর প্রতি অত্যন- আস'া স'াপন করতেন।
শহীদ আজিবরের সব কিছু ছিল পরিচ্ছন্ন। কাজ ছিল নিয়ম বাঁধা। তাঁর হাতের লেখা ছিল খুব সুন্দর। ভারসম্যপূর্ণ জীবন কাটিয়েছেন তিনি। যদিও শহীদ আজিবরের থাকার রুমটি উন্নতমানের ছিল না তবুও রুমটিকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতেন। বই-পুস-কগুলি খুব সুন্দর করে গুছিয়ে রাখতেন। ব্যবহারের জামা কাপড় ভালভাবে গুছিয়ে রাখতেন। কোন দোকানে বাকি খেতে পছন্দ করতেন না। কাউকে কোন কথা দিলে কথা রক্ষার আপ্রাণ চেষ্টা করতেন। মিথ্যা বলা থেকে সব সময় দূরে থাকতেন। গীবত ও চোগলখোরী করাকে একেবারেই অপছন্দ করতেন। আত্মপূজা ও অহংকার থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করতেন।
শহীদ আজিবর রহমান ছিলেন উন্নত চরিত্রের আধিকারী। অত্যন- বিনয়ী ও মিষ্টভাষী ছিলেন। তাঁর উন্নত চরিত্র ও ব্যক্তিত্ব সবাইকে মুগ্ধ করেছিল। এজন্যই বলা যায় শহীদ আজিবর রহমান একটি বিপ্ল্লবী আদর্শ। শহীদ আজিবরের মধ্যে আমরা অনেক বিপ্লবী আদর্শ দেখতে পাই। ইসলামী আন্দোলনের কর্মীরা যদি এসব আদর্শ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে তাহলে এই আদর্শগুলি ইসলামী আন্দোলনেরই পুঞ্জিভূত সম্পদ হিসাবে ইসলামী বিপ্ল্লবকে ত্বরান্বিত করবে। ইনশাআল্ল্লাহ।
(লেখকঃ অধ্যাপক, আইডিয়াল কলেজ, রাজশাহী ও সাবেক সভাপতি, শহীদ শফিকুল ইসলাম উপশাখা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়)
খেলার মাঠে শহীদ আজিবর
মোঃ শোয়াইব রুমি
১৯৯১ সাল। অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র আমি। ২৬১/সোহরাওয়ার্দী হলে থাকতাম। সোহরাওয়ার্দী এবং জোহা হলের শিবির কর্মীরা আমীর আলী হলের উত্তর মাঠে প্রায় প্রত্যেক সকালেই ফুটবল খেলতো। সেখানে বুধপাড়ার মোজাম্মেল ভাইসহ আরো অনেকের সঙ্গে যে মুখটির সমাগম হতো তিনি আর কেউ নন আমার খেলার সাথী এবং ঈষধংং সধঃব শহীদ আজিবর রহমান।
খুলনার তেরখাদা উপজেলায় দায়িত্ব পালন কালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামী ছাত্রশিবিরের কর্মীদের ত্যাগ তিতিক্ষার বহু দৃষ্টান- শুনেছি। বাস-বে দেখার জন্য আফসোস করতাম। আল্লাহ সুযোগ করে দিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার পর। দেখলাম এখানকার জনশক্তির মধ্যে শহীদি জযবার এক অপরূপ দৃশ্য। সকলেই যেন তার পূর্বের শহীদ ভাইদের কাতারে শামিল হতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আল্ল্লাহর দ্বীনের আওয়াজ উচ্চারিত করার জন্য সকল বাধার মুখে তারা নিজের জীবনটা দিতেও প্রস'ত। কি শহীদি আকাঙ্ক্ষা! কত মহৎ এ আকাঙ্ক্ষা!
বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার আগে শুনতাম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘নারায়ে তাকবির আল্ল্লাহু আকবার’ শ্ল্লোগান দেয়ার অপরাধে, ছাত্রদের কাছে কুরআনের দাওয়াত দেয়ার অপরাধে নির্মমভাবে শাহাদাত বরণ করতে হয়েছে আমাদের প্রিয় ভাই শহীদ সাব্বির, হামিদ, আইয়ুব, জব্বার, আসলাম, আসগর, শফিক, আর খলিলকে। বিশ্ববিদ্যালয় আঙ্গিনায় দাড়ি মুখে নিয়ে চলা ছিল একটি দুরূহ ব্যাপার। মুসলিম নামধারী কিছু ইসলাম বিদ্বেষী ছাত্ররা যারা আল্ল্লাহর দ্বীনকে বরদাস- করতে পারতো না, তারা কুরআন হাদীস পর্যন- পুড়িয়ে দিয়েছে। মনে মনে ভাবতাম; যে দেশের রাজধানীকে বলা হয় মসজিদের নগরী, যে দেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, যে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ লোক মুসলমান, সে দেশের শিক্ষা
প্রতিষ্ঠানের ছাত্রদের কাছে কুরআনের দাওয়াত দেয়া যাবে না এটা কেমন কথা। ভাবতাম আর শহীদি প্রেরণায় উজ্জীবিত হয়ে উঠতাম। মনে দৃঢ় সংকল্প করতাম যে প্রয়োজনে শহীদ হব তবু কুরআনের আওয়াজ এ ময়দান থেকে স-ব্ধ হতে দেবনা। রাত্রে আল্ল্লাহর শাহী দরবারে কান্নাকাটি করতাম যে, হে আল্লাহ! তোমার এ জমিনটুকু আমাদের ভিক্ষা দাও, এ ময়দান তোমার কাজ করার জন্য উন্মুক্ত করে দাও। প্রয়োজনে আমাদের যাকে খুশী শহীদ হিসাবে কবুল কর।
আল্লাহ আমাদের দোয়া কবুল করলেন। তারপর একে একে শাহাদাত বরণ করলেন আজিবর রহমান, রবিউল ইসলাম, মোস-াফিজ, ইয়াহিয়া, মোস-াফিজুর রহমান, ইসমাইল হোসেন সিরাজী ভাই। এদের রক্তের বিনিময়ে বিশ্ববিদ্যালয় কুরআনের দাওয়াতের জন্য হল উম্মুক্ত। সন্ত্রাস চাঁদাবাজী আর লুটপাট করে খাওয়া হলো বন্ধ। কিন' এ সুন্দর পরিবেশ কতদিন থাকবে? কারণ ক্ষমতাসীনরা যেখানে রক্ষক হয়ে ভক্ষকের ভূমিকা পালন করেছে, পুলিশ বাহিনীকে ব্যবহার করছে দলীয় কর্মী বাহিনী হিসাবে, বিচারের বাণী সেখানে নিরবে নির্ভৃতে কাঁদে সেখানে ভবিষ্যতে কি হবে তা কে জানে? তারপরও এ কাফেলার সিদ্ধান- সারা জীবন জীবনের বিনিময়ে হলেও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যায়কে আমরা ইসলামী আন্দোলনের দুর্ভেদ্য ঘাঁটিতে পরিণত করে রাখব। কোন বাতিল শক্তির আঁচড় লাগতে দেবনা, ইনশাআল্লাহ।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়কে সন্ত্রাসমুক্ত এবং মহান আল্লাহর দ্বীনের আওয়াজ উচ্চারিত করার ক্ষেত্রে শহীদ আজিবরের ভূমিকা যে কত তা আমার কলমের দ্বারা লিখে শেষ করা যাবে না। মহান আল্লাহই শুধু তা জানেন। সদা কর্মচঞ্চল ও ব্যস- এই শহীদ আজিবর যার মুখ থাকতো হাস্যোজ্জ্বল। আজ যদি মতিহারের সবুজ চত্বরের এই জমিন, ইট, কাঠ, গাছ, পাখ-পাখালীদের কথা বলার শক্তি দেয়া হতো, তা হলে তারা নিশ্চয় অকপটে বর্ণনা করত এই সুন্দর, ভদ্র ও বিনয়ী তরুণের চরিত্রের মাধুর্যতা।
শহীদ আজিবর অতি গরীব ঘরের সন-ান ছিলেন; কিন' তা কখনো বোঝা যেত না। আমরা যারা তার বাড়িতে গিয়েছি বা তার সঙ্গে মিশেছি শুধু তারাই জানতাম। তার শার্ট, প্যান্ট সংখ্যায় কম এবং স্বল্প মূল্যের হলেও সব সময় থাকতো ঝকঝকে পরিষ্কার। রাসূলের (সাঃ) আদর্শনুসারী আজিবর সব সময় আগে সালাম দেয়ার চেষ্টা করতেন। দায়িত্বশীলদের প্রতি ভীষণ আনুগত্য পরায়ন ছিলেন শহীদ আজিবর। একদিন মতিউর রহমান আকন্দ ভাইকে গভীর রাত্রে শববেদারীর প্রোগ্রাম থেকে হলে এগিয়ে দিয়ে গেলেন। আমিও ছিলাম সঙ্গে। আমাদের এগিয়ে দিয়ে তিনি নিজেই আবার একা ফিরে গেলেন, কত সাহসী! কত নির্ভীক শহীদ আজিবর।
মাঠে ফুটবল খেলা নিয়ে একটু রাগারাগি হলে তিনি মিটমাট করে দিতেন। বল ঠিকমত না খেললে দলীয় লোকদের রাগারাগি করতেন। সে রাগারাগি কত ভালবাসায় ভরা তা ইসলামী আন্দোলনের কর্মীরাই শুধু জানে। কারণ এ বন্ধন রক্তের নয়, এ বন্ধন সম্পদের নয়, এ বন্ধন দ্বীনের বন্ধন। আমি ছোট বেলা থেকে কম বেশী ফুটবল খেলতাম। কিন' শহীদ আজিবরের মত নয়। আমি যে দিন উনার দলে পড়তাম সেদিন বলতাম আমি আপনার মত অত সুন্দর খেলতে পারবনা তাই বলে রাগ করবেন আজিবর ভাই? মিষ্টি হেসে বলতেন চেষ্টা করুন পারবেন। সে মিষ্টি হাসি কত সুন্দর, কত ্লিগ্ধময়, কত ভালবাসার। আমাকে অনেক সময় ভাল ভাল পরামর্শ দিতেন। কত আপন, কত কাছের, কত ভালবাসার শহীদ আজিবর। যিনি আমার খেলার সাথী, মিছিলের সাথী, টি.এস, টি.সি - এর সাথী, পড়ার সাথী ছিলেন। আর কি তার দেখা পাব? পাব নিশ্চয় পাব জান্নাতের মধ্যে। হে আল্ল্লাহ! শহীদ আজিবর সহ হাজার হাজার শহীদদের সাথে জান্নাতে সাক্ষাত ঘটিয়ে দিও। আবারও যেন ইহজগতের মত আমার প্রিয় সাথী শহীদ আজিবরের সাথে জান্নাতে সহযাত্রী হয়ে বসবাস করতে পারি। এ দোয়া যেন কবুল হয়। আমীন। (লেখক: ছাত্র আন্দোলন বিষয়ক সম্পাদক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়)
খুলনার তেরখাদা উপজেলায় দায়িত্ব পালন কালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামী ছাত্রশিবিরের কর্মীদের ত্যাগ তিতিক্ষার বহু দৃষ্টান- শুনেছি। বাস-বে দেখার জন্য আফসোস করতাম। আল্লাহ সুযোগ করে দিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার পর। দেখলাম এখানকার জনশক্তির মধ্যে শহীদি জযবার এক অপরূপ দৃশ্য। সকলেই যেন তার পূর্বের শহীদ ভাইদের কাতারে শামিল হতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আল্ল্লাহর দ্বীনের আওয়াজ উচ্চারিত করার জন্য সকল বাধার মুখে তারা নিজের জীবনটা দিতেও প্রস'ত। কি শহীদি আকাঙ্ক্ষা! কত মহৎ এ আকাঙ্ক্ষা!
বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার আগে শুনতাম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘নারায়ে তাকবির আল্ল্লাহু আকবার’ শ্ল্লোগান দেয়ার অপরাধে, ছাত্রদের কাছে কুরআনের দাওয়াত দেয়ার অপরাধে নির্মমভাবে শাহাদাত বরণ করতে হয়েছে আমাদের প্রিয় ভাই শহীদ সাব্বির, হামিদ, আইয়ুব, জব্বার, আসলাম, আসগর, শফিক, আর খলিলকে। বিশ্ববিদ্যালয় আঙ্গিনায় দাড়ি মুখে নিয়ে চলা ছিল একটি দুরূহ ব্যাপার। মুসলিম নামধারী কিছু ইসলাম বিদ্বেষী ছাত্ররা যারা আল্ল্লাহর দ্বীনকে বরদাস- করতে পারতো না, তারা কুরআন হাদীস পর্যন- পুড়িয়ে দিয়েছে। মনে মনে ভাবতাম; যে দেশের রাজধানীকে বলা হয় মসজিদের নগরী, যে দেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, যে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ লোক মুসলমান, সে দেশের শিক্ষা
প্রতিষ্ঠানের ছাত্রদের কাছে কুরআনের দাওয়াত দেয়া যাবে না এটা কেমন কথা। ভাবতাম আর শহীদি প্রেরণায় উজ্জীবিত হয়ে উঠতাম। মনে দৃঢ় সংকল্প করতাম যে প্রয়োজনে শহীদ হব তবু কুরআনের আওয়াজ এ ময়দান থেকে স-ব্ধ হতে দেবনা। রাত্রে আল্ল্লাহর শাহী দরবারে কান্নাকাটি করতাম যে, হে আল্লাহ! তোমার এ জমিনটুকু আমাদের ভিক্ষা দাও, এ ময়দান তোমার কাজ করার জন্য উন্মুক্ত করে দাও। প্রয়োজনে আমাদের যাকে খুশী শহীদ হিসাবে কবুল কর।
আল্লাহ আমাদের দোয়া কবুল করলেন। তারপর একে একে শাহাদাত বরণ করলেন আজিবর রহমান, রবিউল ইসলাম, মোস-াফিজ, ইয়াহিয়া, মোস-াফিজুর রহমান, ইসমাইল হোসেন সিরাজী ভাই। এদের রক্তের বিনিময়ে বিশ্ববিদ্যালয় কুরআনের দাওয়াতের জন্য হল উম্মুক্ত। সন্ত্রাস চাঁদাবাজী আর লুটপাট করে খাওয়া হলো বন্ধ। কিন' এ সুন্দর পরিবেশ কতদিন থাকবে? কারণ ক্ষমতাসীনরা যেখানে রক্ষক হয়ে ভক্ষকের ভূমিকা পালন করেছে, পুলিশ বাহিনীকে ব্যবহার করছে দলীয় কর্মী বাহিনী হিসাবে, বিচারের বাণী সেখানে নিরবে নির্ভৃতে কাঁদে সেখানে ভবিষ্যতে কি হবে তা কে জানে? তারপরও এ কাফেলার সিদ্ধান- সারা জীবন জীবনের বিনিময়ে হলেও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যায়কে আমরা ইসলামী আন্দোলনের দুর্ভেদ্য ঘাঁটিতে পরিণত করে রাখব। কোন বাতিল শক্তির আঁচড় লাগতে দেবনা, ইনশাআল্লাহ।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়কে সন্ত্রাসমুক্ত এবং মহান আল্লাহর দ্বীনের আওয়াজ উচ্চারিত করার ক্ষেত্রে শহীদ আজিবরের ভূমিকা যে কত তা আমার কলমের দ্বারা লিখে শেষ করা যাবে না। মহান আল্লাহই শুধু তা জানেন। সদা কর্মচঞ্চল ও ব্যস- এই শহীদ আজিবর যার মুখ থাকতো হাস্যোজ্জ্বল। আজ যদি মতিহারের সবুজ চত্বরের এই জমিন, ইট, কাঠ, গাছ, পাখ-পাখালীদের কথা বলার শক্তি দেয়া হতো, তা হলে তারা নিশ্চয় অকপটে বর্ণনা করত এই সুন্দর, ভদ্র ও বিনয়ী তরুণের চরিত্রের মাধুর্যতা।
শহীদ আজিবর অতি গরীব ঘরের সন-ান ছিলেন; কিন' তা কখনো বোঝা যেত না। আমরা যারা তার বাড়িতে গিয়েছি বা তার সঙ্গে মিশেছি শুধু তারাই জানতাম। তার শার্ট, প্যান্ট সংখ্যায় কম এবং স্বল্প মূল্যের হলেও সব সময় থাকতো ঝকঝকে পরিষ্কার। রাসূলের (সাঃ) আদর্শনুসারী আজিবর সব সময় আগে সালাম দেয়ার চেষ্টা করতেন। দায়িত্বশীলদের প্রতি ভীষণ আনুগত্য পরায়ন ছিলেন শহীদ আজিবর। একদিন মতিউর রহমান আকন্দ ভাইকে গভীর রাত্রে শববেদারীর প্রোগ্রাম থেকে হলে এগিয়ে দিয়ে গেলেন। আমিও ছিলাম সঙ্গে। আমাদের এগিয়ে দিয়ে তিনি নিজেই আবার একা ফিরে গেলেন, কত সাহসী! কত নির্ভীক শহীদ আজিবর।
মাঠে ফুটবল খেলা নিয়ে একটু রাগারাগি হলে তিনি মিটমাট করে দিতেন। বল ঠিকমত না খেললে দলীয় লোকদের রাগারাগি করতেন। সে রাগারাগি কত ভালবাসায় ভরা তা ইসলামী আন্দোলনের কর্মীরাই শুধু জানে। কারণ এ বন্ধন রক্তের নয়, এ বন্ধন সম্পদের নয়, এ বন্ধন দ্বীনের বন্ধন। আমি ছোট বেলা থেকে কম বেশী ফুটবল খেলতাম। কিন' শহীদ আজিবরের মত নয়। আমি যে দিন উনার দলে পড়তাম সেদিন বলতাম আমি আপনার মত অত সুন্দর খেলতে পারবনা তাই বলে রাগ করবেন আজিবর ভাই? মিষ্টি হেসে বলতেন চেষ্টা করুন পারবেন। সে মিষ্টি হাসি কত সুন্দর, কত ্লিগ্ধময়, কত ভালবাসার। আমাকে অনেক সময় ভাল ভাল পরামর্শ দিতেন। কত আপন, কত কাছের, কত ভালবাসার শহীদ আজিবর। যিনি আমার খেলার সাথী, মিছিলের সাথী, টি.এস, টি.সি - এর সাথী, পড়ার সাথী ছিলেন। আর কি তার দেখা পাব? পাব নিশ্চয় পাব জান্নাতের মধ্যে। হে আল্ল্লাহ! শহীদ আজিবর সহ হাজার হাজার শহীদদের সাথে জান্নাতে সাক্ষাত ঘটিয়ে দিও। আবারও যেন ইহজগতের মত আমার প্রিয় সাথী শহীদ আজিবরের সাথে জান্নাতে সহযাত্রী হয়ে বসবাস করতে পারি। এ দোয়া যেন কবুল হয়। আমীন। (লেখক: ছাত্র আন্দোলন বিষয়ক সম্পাদক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন