শনিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১১

মিথ্যে দিয়ে সত্যের গতিরোধ করা যায়না




মিথ্যার ও একটি শক্তি আছে যাকে ইংরেজীতে বলে-The Power Of Lies (মিথ্যার শক্তি) একটা মিথ্যাকে যখন বার বার বলা হয় তখন সেই মিথ্যাটা একসময় সমাজে সত্য বলে পরিচিতি লাভ করে। এমনকি যে প্রথম এই মিথ্যাটা শুরু করেছিল সেও এক সময় বার বার শুনতে শুনতে এবং বার বার বলতে গিয়ে সেই মিথ্যাটাকে সত্য ভাবতে শুরু করে। ইংরেজীতে আরও একটি কথা আছে, When money speaks, the truth is silent.
'
অর্থ যখন কথা বলে সত্যে তখন চুপ থাকে'। অর্থ দিয়ে সাময়িকের জন্য হয়তো মিথ্যার পাহাড় রচনা করা যায় কিন্তু সত্যের বিষ্পোরনে সেই পাহাড় একসময় ভেঙ্গে চুরে চুরমার হয়ে যায়। একে চিরস্থায়ী রুপ দেবার ক্ষমতা পৃথিবীর কারো নেই।

পবিএ কোরআনে,সূরা-ইসরা-১৮৩ নং আয়াতে আল্লাহ বলছেন,
وَقُلْ جَاءَ الْحَقُّ وَزَهَقَ الْبَاطِلُ ۚ إِنَّ الْبَاطِلَ كَانَ زَهُوقًا
অর্থঃ ''যখন সত্য এসে মিথ্যার সামনে দাঁড়ায়, মিথ্যা বিলুপ্ত হয়ে যায় কারন,মিথ্যার বৈশিষ্টই হলো এমন যে,সে একদিন বিলুপ্ত হবেই''
প্রচন্ড ঘোঁর অন্ধকারে যখন চোঁখের সামনে মেলে ধরা হাতটিকেও আমরা দেখতে পাইনা তখন শুধুমাত্র একটি ম্যাচের কাঠিই সকল অন্ধকার দূর করে দেয়। সত্যেকে যতই মিথ্যার শক্তি দিয়ে চাপিয়ে রাখা হয়না কেন সে তার আপন শক্তিতে বিস্পোরিত হবেই। এটাই চিরন্তন সত্যে কথা। সত্যের মুখো মুখী হয়ে মিথ্যা কখনোই দাঁড়াতে পারেনা। যেমন-আলোর বিপরীতে অন্ধকার।

জামায়াত নেতাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ইস্যূটিও আজ ঐ প্রথম মিথ্যে বলা লোকটির মত হয়ে গেছে।ওরা (মিথ্যাবাদীর দল) নিরপরাধ জামায়াত নেতাদের বিরুদ্ধে এই ইস্যূটিকে নিয়ে এতই মিথ্যা অপপ্রচার করেছে যে ,এখন তারা নিজেরাও এটাকে সত্যে ভাবতে শুরু করেছে।
আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদী যিনি শুধু আমার নয় বাংলাদেশের কোটি জনতার প্রিয় একজন ব্যক্তিত্ব। যিনি বাংলা ভাষী কোটি কোটি তৌহিদী জনতাকে সুমিষ্ট কন্ঠে ডেকেছেন আল্লাহর পথে, সত্যের পথে, ঈমানের পথে, কল্যাণের পথে। এমন বাংলাভাষী মুসলিম কে আছেন যিনি সাঈদীর সুমধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে চোখের জলে বুক ভাসিয়ে দেয় নি? অথচ সেই মানুষটিকে নিয়ে আজ ওরা মিথ্যা,মিথ্যার খেলায় মেতেছে। আর তিনিও তাদের সেই কল্পিত মিথ্যার রচনবলী শুনে মৃদু হাঁসছিলেন। আমরাও তার প্রতি জঘন্য মিথ্যাচার হতে দেখেও বিন্দুমাত্রও বিস্মিত হইনি কারন আমি মনে করি এটা নতুন কিছু নয় ইতিহাসের প্রতিটি পাতায় পাতায় লেখা আছে হাঁজারো এমন অপরাধীর কথা, যাদের উপর মিথ্যার পাহাড় চাপিয়ে দেবার চেষ্টা করেছিল অত্যাচারী শাসক দল।

আল্লাহর দ্ধীন প্রচারে প্রসারে কখনো বাধাহীন ছিলনা। সেই আবহমান কাল থেকে শুরু করে ইসলামের সাথে আবু লাহাব,আবু জেহেলদের সংঘর্ষ এটি আবহমান কাল থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত চলে এসেছে। এটি চিরন্তন কিন্তু শেষ পর্যন্ত ইসলামের বিরুদ্ধে আবু জেহেল, আবু লাহাব,উতবা, শাইবা, ফেরাউন, নমরুদ, হামাছ, সাত্তার ও দুনিয়ার তাবৎ সন্ত্রাসী স্বৈরাচারদের ইসলাম বিরুধী আন্দোলন একসময় স্থিপিত হয়ে পড়েছে।
এবং তাদের পরিচালিত এই ঝড়ো হাওয়া এক সময় একেবারেই বন্ধ হয়ে গিয়ে স্তব্দ হয়ে গিয়ে নূরে মোহাম্মদী (সঃ) যে দ্ধীন নিয়ে এসেছিলেন। পয়গম্বর আম্বিয়ায়ে (আঃ) যে দ্ধীন নিয়ে এসেছিলেন, আল্লাহর দেয়া সেই দ্ধীনের বাতি টিপ,টিপ করে জ্বলতে রয়েছে। এটাকে কেউ নিভাতে পারবেনা। মিথ্যে দিয়ে কখনোই সত্যের গতিরোধ করা যায়না।

ইতিহাসের পাতা খুললেই দেখতে পাই যারা সত্যের পথে লড়ে, তাদের প্রতি পদে পদে লাঞ্ছনা, গঞ্জনা, অপমান আর অত্যাচার-নির্যাতনের বাধা। তবুও সত্য এগিয়ে চলে, আলোয় আলোয় ভরে ওঠে অন্ধকার ভূবন। আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীনকে কায়েমের সংগ্রামের চেয়ে বড় অপরাধ আর কি হতে পারে বাতিলের কাছে? আবু জেহেলদের নিকট এরাই সবচেয়ে বড় অপরাধী। ইতিহাসের বিচারে, বর্তমান সভ্য সমাজের বিচারে কিছুতেই এমন অপরাধীদের জন্য লালগালিচা আশা করা যায় না,

আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর আইনজীবি সেদিন বলেছিল, এটা নাকি সাঈদীর বিরুদ্ধে এই শতাব্দীর নিকৃষ্টতম মিথ্যাচার। তবে মিথ্যে বলারও একটা সীমা থাকা উচিত। মিথ্যে সকল পাপের মা। মিথ্যে দিয়ে আর যা-ই হোক পতন ঠেকানো যাবে না, মানুষকে বিভ্রান্ত করা যায় না। গোটা জাতির চোখকে ধুলো দিয়ে একটি মিথ্যেকে সত্যে পরিণত করার অপচেষ্টা চালিয়ে ওরা পুরো জাতিকে বিভ্রান্ত করতে চায়। কিন্তু তাদের জানিয়ে রাখতে চাই জেল-জুলুম হুলিয়া হৃদয় কাঁপিয়ে দিতে পারে চোর-ছ্যাচোর আর সন্ত্রাসী জানোয়ারদের, ইসলামী আন্দোলনের কর্মীকে দমাতে পারে এমন নির্যাতনের কৌশল রেখে যেতে পারে নি হিটলার, চেঙ্গিস, ফেরাওন নমরুদের মতো পিশাচের দল।

আজ তোমরা যারা মিথ্যার ঝংকারে ঝংকিত হয়ে,সাপের ন্যায় ফুঁসে উঠার বৃথা চেষ্টা করছ। সত্যে একদিন তোমাদের সেই বিষদাত ভেঙ্গে দেবে নিশ্চই।
যতই চুরমারের হাতিয়ার নিয়ে সত্যকে চিরে ফেলার ছিন্ন করার বীভৎস-আনন্দ নিতে চাও। আমরা তোমাদের ঘৃণা বুকে-ধিক্কার দিবনা। শুধু এতটুকুন বলবো...মিথ্যের পাহাড় রচনা করে সত্যের বিষ্ফোরন ঠেকানো যায়না। মিথ্যে দিয়ে সত্যের গতিরোধ করা যায়না।



কোন মন্তব্য নেই: