নাম: মো: সাব্বির আহমদ
সাংগঠনিক মান: সদস্য প্রার্থী
শহীদ হওয়ার তারিখ: ১১ মার্চ ১৯৮২।
পিতার নাম: মো: জামিল খান
কৃতিত্ব: উপশহরে “অনুসন্ধানী” বিজ্ঞান ক্লাব গঠন, প্রজেক্ট ইথাইল
এ্যালকোহল, বায়ুচালিত করাত কল ও স্বয়ংক্রিয় পাট রক্ষণাগার।
জীবনের লক্ষ্য: ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার ইচ্ছা।
শহীদ হওয়ার স্থান: জোহার মাজারের পার্শ্বে।
অস্ত্রের ধরন: ছুরি, লাঠি, বল্লম, হকিস্টিক, রড।
কাদের আঘাতে শহীদ: ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্রলীগ(ক-চু), ছাত্রলীগ (মু-হা), ছাত্রমৈত্রী।
স্থায়ী ঠিকানা: রাজশাহী উপশহর, ডাক: সেনানিবাস, থানা: বোয়ালিয়া, জেলা: রাজশাহী।
ভাইবোন : ৬ জন।
ভাই-বোনদের মাঝে অবস্থান: বড়।
পরিবারের মোট সদস্য: ১১ জন।
পিতা: জীবিত, পেশা: সোনালী ব্যাংকের সাবেক নাইট গার্ড।
মাতা: জীবিত: পেশা: গৃহিণী।
শাহাদতের পর শহীদের পিতার প্রতিক্রিয়া: পিতা মোনাজাত করলেন, “হে আল্লাহ! এমন ছেলের পিতা হওয়ার গৌরবে আমি তোমার দরবারে শোকর আদায় করছি। আমার ছেলের শাহাদাত কবুল করে নাও।” গর্বিত পিতা নিজেই শহীদ পুত্রের জানাযায় ইমামতি করলেন। হাত উঠালেন আল্লাহর দরবারে। শহীদ পুত্রের শাহাদত কবুলিয়াতের এবং আহত কর্মীদের সুস্থতার জন্য দোয়া করলেন দুই চোখের পানি ছেড়ে।
সাংগঠনিক মান: সদস্য প্রার্থী
শহীদ হওয়ার তারিখ: ১১ মার্চ ১৯৮২।
পিতার নাম: মো: জামিল খান
কৃতিত্ব: উপশহরে “অনুসন্ধানী” বিজ্ঞান ক্লাব গঠন, প্রজেক্ট ইথাইল
এ্যালকোহল, বায়ুচালিত করাত কল ও স্বয়ংক্রিয় পাট রক্ষণাগার।
জীবনের লক্ষ্য: ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার ইচ্ছা।
শহীদ হওয়ার স্থান: জোহার মাজারের পার্শ্বে।
অস্ত্রের ধরন: ছুরি, লাঠি, বল্লম, হকিস্টিক, রড।
কাদের আঘাতে শহীদ: ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্রলীগ(ক-চু), ছাত্রলীগ (মু-হা), ছাত্রমৈত্রী।
স্থায়ী ঠিকানা: রাজশাহী উপশহর, ডাক: সেনানিবাস, থানা: বোয়ালিয়া, জেলা: রাজশাহী।
ভাইবোন : ৬ জন।
ভাই-বোনদের মাঝে অবস্থান: বড়।
পরিবারের মোট সদস্য: ১১ জন।
পিতা: জীবিত, পেশা: সোনালী ব্যাংকের সাবেক নাইট গার্ড।
মাতা: জীবিত: পেশা: গৃহিণী।
শাহাদতের পর শহীদের পিতার প্রতিক্রিয়া: পিতা মোনাজাত করলেন, “হে আল্লাহ! এমন ছেলের পিতা হওয়ার গৌরবে আমি তোমার দরবারে শোকর আদায় করছি। আমার ছেলের শাহাদাত কবুল করে নাও।” গর্বিত পিতা নিজেই শহীদ পুত্রের জানাযায় ইমামতি করলেন। হাত উঠালেন আল্লাহর দরবারে। শহীদ পুত্রের শাহাদত কবুলিয়াতের এবং আহত কর্মীদের সুস্থতার জন্য দোয়া করলেন দুই চোখের পানি ছেড়ে।
সাব্বির : ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রথম শহীদ
ফিরোজ খান নুন
বাধার প্রাচীর ডিঙ্গিয়ে আল্ল্লাহর কালেমাকে বুলন্দ করতে, অত্যাচার, নির্যাতন, জেল, জুলুম, আন্দোলন, সংগ্রাম, রক্তদান, জীবন দান মোমেন জীবনের খুবই কাছাকাছি এবং একান- পরিচিত কয়টি শব্দ মাত্র। আল্লাহর ঘোষণা, ‘জান্নাতের বিনিময়ে আল্ল্লাহ মোমেনদের জান ও মালকে খরিদ করে নিয়েছেন’ (তওবা ১১১)। ইসলামী ছাত্র আন্দোলনে জান ও মালকে নজরানা পেশের অবিস্মরণীয় একটি রক্তাক্ত ময়দানের নাম ১৪ শহীদের স্মৃতি বিজড়িত মতিহারের সবুজ চত্বর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৭৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারী শহীদী কাফেলার অগ্রযাত্রার রক্তাক্ত পথ পেরিয়ে ১৯৮২ সালের ১১ মার্চ বাংলাদেশের ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাসে প্রথম শহীদ হওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করেন শহীদ সাব্বির আহমদ। এই সবুজ চত্বর হামযা, জাফর, যায়েদ, রাওয়াহা (রা)এর নেতৃত্বে শহীদী মিছিলে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ৯৮ জন শহীদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন শহীদ সাব্বির। ১১ মার্চ। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাগত সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। প্রশাসনিক ভবনের পশ্চিম চত্বরে নবাগতদের পদভারে মুখরিত হয়ে ওঠে, হয়ে ওঠে হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রীর মিলনস্থল। অনুষ্ঠান উপভোগ করতে আসে শহর, গ্রাম থেকে আবাল বৃদ্ধ যুবক সকলে।
হাজার হাজার জনতার এই মিলনস'লে আগমন ঘটিয়ে নিজেকে ধন্য করতে এসেছিলেন রাজশাহী শহরের আবাসিক এলাকা বোয়ালিয়া থানার অন্তর্গত উপশহরের সেই এ/২২ নং পুরাতন মডেলের পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন সুসজ্জিত বাড়ির ১৮ বৎসর বয়স্ক, কঠোর পরিশ্রমী, চঞ্চল, সদা হাস্যোজ্জল শহীদ সাব্বির। রাজশাহী শহরে উপকণ্ঠে অবস্থিত, সোনালী ব্যাংকের নাইট গার্ড পিতা জামিল খানের দরিদ্রতাকে মোকাবেলা করে নিজ লক্ষ্য বাস-বায়নের দৃঢ়তায় লেখাপড়ার খরচ জোগাড় করার জন্য বাড়িতে কলমের কালি তৈরির প্রজেক্টসহ কসমেটিক দ্রব্যের ব্যবসা করতেন। কৈশোরে আল্লাহ্ রাসুল যেমন সমাজের শানি- শৃংখলা রক্ষায় হিলফুল ফুযুল নামক ক্লাব গঠন করে সমাজ সেবায় আত্মনিয়োগ করেন, সেই রাসুলের আদর্শের অনুসারী শহীদ সাব্বির ও উপশহরের সামাজিক শানি- শৃঙ্খলার স্বার্থে সুপ্রতিষ্ঠিত ‘অনুসন্ধান ক্লাব’-এর সদস্য পদ লাভ করে সমাজ সেবায় ভূমিকা রাখেন। সদা চঞ্চল স্মার্ট কিশোরটি শুধু আদর্শবান ছাত্র নয়, একজন খেলোয়াড় ও সংগঠক হিসাবে ভূমিকা রেখেও অনেক পুরস্কার অর্জন করেন।
হেলে দুলে চলার গতিতে নীরবতা যেন শহীদ সাব্বিরের ব্যক্তিত্বকে উজ্জ্বলতা দান করে। হঠাৎ নজর কাড়া পরিবর্তন লক্ষ্য করেন সমাজের সকল ব্যক্তিসহ পিতামাতা। চারদিক থেকে সাব্বিরের সুনাম প্রচারিত হতে থাকে। ইসলামী আন্দোলনে অন-র্ভুক্তির সাথে সাথে তিনি গড়ে তোলেন নিজেকে আদর্শবান ছাত্র হিসেবে এবং দাওয়াতী কাজে অত্যন- সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। মান উন্নয়ন করে ইসলামী আন্দোলনে সাথী হিসাবে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি তীক্ষ্ণ মেধাবী সাব্বির দৈনিক মাত্র ২/৩ ঘন্টা লেখাপড়া করে ১৯৭৯ সালে অত্যন- কৃতিত্বের সাথে প্রথম বিভাগে এস.এস.সি. পাস করে এলাকায় সংগঠনের ব্যাপক ইমেজ গড়ে তোলেন। এস.এস.সি. পরীক্ষা দিয়ে সংগঠনের কাজের গতি বৃদ্ধি করেন এবং প্রায় সময়ই শহীদের স্মৃতি বিজড়িত গানগুলো অত্যন- দরদভরা কণ্ঠে গাইতেন।
উপশহর এলাকার ব্ল্লক দায়িত্বশীল হিসাবে দায়িত্ব পালন কালে এলাকার শিশু, কিশোর, যুবক, বৃদ্ধ সবার সাথে অত্যন- মিষ্টি কণ্ঠে আলাপকারী হিসাবে সুপরিচিতি অর্জন করেছিলেন। সমাজের কারো সাথে কোন বিষয় নিয়ে সামান্যতমও কোনদিন উচ্চবাচ্য হয়নি। তবে সত্য প্রতিষ্ঠার সৈনিক হিসাবে ন্যায় কথা বলায় অত্যন্তদৃঢ় ছিলেন। সমাজের সবার জন্য একটি লক্ষ্য করার বিষয় ছিল শহীদ সাব্বির অন্যের উপকার করার জন্য অত্যন্ত আগ্রহী ছিলেন, অন্যের সেবা করে আনন্দ পেতেন। আড়ম্বরহীন জীবন যাপন করাই শহীদ সাব্বিরের জন্য সাধারণ বিষয় ছিল। সামান্য দামের একটি শার্ট প্যান্টের উপরে ঝুলিয়ে দিয়ে দাওয়াতী কাজে বের হতেন অত্যন- নির্মল পরিচ্ছন্ন মন নিয়ে। বিশেষ কোন খাবারের প্রতি আকর্ষণ ছিলো না। তবে মাঝে মাঝে দ্বীনি বন্ধুদের সাথে চকলেট কিনে নিজে খেতেন ও অন্যকে খাওয়াতেন।
শহীদ সাব্বির আল্ল্লাহর দ্বীনের পথে নিজের শ্রেষ্ঠ সম্পদ বিলিয়ে দেয়ার আগে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন আল্ল্লাহর পথে মাল কুরবানী দেয়ার। সংগঠনের জন্য অনেক অর্থ ব্যয় করেছেন নিজ পকেট থেকে। বায়তুল মাল থেকে খরচ করার মত খাত থাকা সত্ত্বেও খরচ করেননি শুধু বায়তুল মালের কঠোর হিসাব দিতে হবে আল্লাহর কাছে এই ভয়ে। শহীদ সাব্বির ভাই তার ছোট ভাই আকরামকে অত্যন- যত্নের সাথে ছোট ভাইয়ের হক আদায় করার মানসিকতা নিয়ে যথা সম্ভব গাইড করতেন। তাই ছোট ভাইয়ের ভাষ্য, ‘বড় ভাইয়ার শাহাদাতের খবর শুনে প্রথমে বিশ্বাস করতে পারিনি। কিন' বিশ্বাস আমাকে করতে হয়েছে।’ ১১ মার্চের সকাল বেলার স্মৃতি বলতে গিয়ে ছোট ভাই বাকরুদ্ধ হয়ে যাচ্ছিলেন। যা দেখে আমি নিজেও আবেগে আপ্লুত হয়ে যাচ্ছিলাম। শহীদ সাব্বির সংগঠনের নেতার আনুগত্যের প্রতি ছিলেন অত্যন- আন্তরিক। সংগঠনের পক্ষ থেকে সংবাদ দিলেন আজ ১১ মার্চ সকাল ৯-৪০ মিনিটের বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়িতে ক্যাম্পাসে যেতে হবে। বাড়ির সকল জরুরি কাজ সমাপ্ত করে রান্না ঘরে মায়ের কাছে খেতে গিয়ে দেখেন রুটি এখনো ভাজা হয়নি। তাড়াহুড়ো করে চুলোর ওপর থেকে দু'টো রুটি খেয়ে ক্যাম্পাসে রওয়ানা দেন। শহীদ সাব্বির জানতেন না এটাই আল্ল্লাহর তরফ থেকে দুনিয়ার সর্বশেষ রিজিক। শহীদ সাব্বির দ্বীনের দাওয়াতী কাজসহ অন্যান্য কাজ আঞ্জাম দিয়ে যেটুকু অবসর সময় পেতেন তা কুরআন তিলাওয়াত আর জিকির করে কাটাতেনে। যারা আল্লাহর দাসত্ব কবুল করেছে তারা জিকিরের মধ্য দিয়েই তাদের সময় অতিবাহিত করেন।
শহীদ সাব্বির শাহাদাত বরণ করে যেমন নিজে হয়েছেন ধন্য, তেমনি রেখে গেছেন এই জমিনের জন্য একটি অনুকরণীয় আদর্শ। তৈরি করে দিয়েছেন কিছু চেতনা, কিছু অনুপ্রেরণা। সূর্য উদিত হয় প্রতিদিনের ন্যায়। কোন কোন দিন এমনও আছে রৌদ্রজ্জ্বল সকাল আর রৌদ্র তাপদগ্ধ দুপুরের পর দিনের শেষে বিকেল এসে সৃষ্টি হয় অমাবস্যার রাত। কিন' অমাবস্যার ঘন কালো রাতও পোহায়। অতঃপর দিনের আলোয় চারদিক আবার আলোকিত হয়। কোন কোন জীবনও এরকম দিন আর রাত্রির মত। স্বীয় প্রতিভা গুণে গুণান্বিত এসব মানুষ অনুরাগীদের আকৃষ্টই করেন, হয়ে ওঠেন আলোচনার বিষয়বস', স্বীকৃত হয় তাদের প্রতিভা। রক্তের স্রোতধারার উৎস শহীদ সাব্বিরের আত্মা শানি- পাবে একটি সফল ইসলামী বিপ্ল্লব সাধনের মধ্য দিয়ে, যখন দুনিয়ার মানুষ আল্ল্লাহর আইন-কানুনের পাবন্দ করবে। ধুয়ে যাক সকল কালিমা, সফল হোক শহীদ সাব্বিরের রক্ত। “পাথরে পারদ জ্বলে
জলে ভাঙ্গে ঢেউ
ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে জানি
গড়ে যাবে কেউ।”
হাজার হাজার জনতার এই মিলনস'লে আগমন ঘটিয়ে নিজেকে ধন্য করতে এসেছিলেন রাজশাহী শহরের আবাসিক এলাকা বোয়ালিয়া থানার অন্তর্গত উপশহরের সেই এ/২২ নং পুরাতন মডেলের পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন সুসজ্জিত বাড়ির ১৮ বৎসর বয়স্ক, কঠোর পরিশ্রমী, চঞ্চল, সদা হাস্যোজ্জল শহীদ সাব্বির। রাজশাহী শহরে উপকণ্ঠে অবস্থিত, সোনালী ব্যাংকের নাইট গার্ড পিতা জামিল খানের দরিদ্রতাকে মোকাবেলা করে নিজ লক্ষ্য বাস-বায়নের দৃঢ়তায় লেখাপড়ার খরচ জোগাড় করার জন্য বাড়িতে কলমের কালি তৈরির প্রজেক্টসহ কসমেটিক দ্রব্যের ব্যবসা করতেন। কৈশোরে আল্লাহ্ রাসুল যেমন সমাজের শানি- শৃংখলা রক্ষায় হিলফুল ফুযুল নামক ক্লাব গঠন করে সমাজ সেবায় আত্মনিয়োগ করেন, সেই রাসুলের আদর্শের অনুসারী শহীদ সাব্বির ও উপশহরের সামাজিক শানি- শৃঙ্খলার স্বার্থে সুপ্রতিষ্ঠিত ‘অনুসন্ধান ক্লাব’-এর সদস্য পদ লাভ করে সমাজ সেবায় ভূমিকা রাখেন। সদা চঞ্চল স্মার্ট কিশোরটি শুধু আদর্শবান ছাত্র নয়, একজন খেলোয়াড় ও সংগঠক হিসাবে ভূমিকা রেখেও অনেক পুরস্কার অর্জন করেন।
হেলে দুলে চলার গতিতে নীরবতা যেন শহীদ সাব্বিরের ব্যক্তিত্বকে উজ্জ্বলতা দান করে। হঠাৎ নজর কাড়া পরিবর্তন লক্ষ্য করেন সমাজের সকল ব্যক্তিসহ পিতামাতা। চারদিক থেকে সাব্বিরের সুনাম প্রচারিত হতে থাকে। ইসলামী আন্দোলনে অন-র্ভুক্তির সাথে সাথে তিনি গড়ে তোলেন নিজেকে আদর্শবান ছাত্র হিসেবে এবং দাওয়াতী কাজে অত্যন- সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। মান উন্নয়ন করে ইসলামী আন্দোলনে সাথী হিসাবে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি তীক্ষ্ণ মেধাবী সাব্বির দৈনিক মাত্র ২/৩ ঘন্টা লেখাপড়া করে ১৯৭৯ সালে অত্যন- কৃতিত্বের সাথে প্রথম বিভাগে এস.এস.সি. পাস করে এলাকায় সংগঠনের ব্যাপক ইমেজ গড়ে তোলেন। এস.এস.সি. পরীক্ষা দিয়ে সংগঠনের কাজের গতি বৃদ্ধি করেন এবং প্রায় সময়ই শহীদের স্মৃতি বিজড়িত গানগুলো অত্যন- দরদভরা কণ্ঠে গাইতেন।
উপশহর এলাকার ব্ল্লক দায়িত্বশীল হিসাবে দায়িত্ব পালন কালে এলাকার শিশু, কিশোর, যুবক, বৃদ্ধ সবার সাথে অত্যন- মিষ্টি কণ্ঠে আলাপকারী হিসাবে সুপরিচিতি অর্জন করেছিলেন। সমাজের কারো সাথে কোন বিষয় নিয়ে সামান্যতমও কোনদিন উচ্চবাচ্য হয়নি। তবে সত্য প্রতিষ্ঠার সৈনিক হিসাবে ন্যায় কথা বলায় অত্যন্তদৃঢ় ছিলেন। সমাজের সবার জন্য একটি লক্ষ্য করার বিষয় ছিল শহীদ সাব্বির অন্যের উপকার করার জন্য অত্যন্ত আগ্রহী ছিলেন, অন্যের সেবা করে আনন্দ পেতেন। আড়ম্বরহীন জীবন যাপন করাই শহীদ সাব্বিরের জন্য সাধারণ বিষয় ছিল। সামান্য দামের একটি শার্ট প্যান্টের উপরে ঝুলিয়ে দিয়ে দাওয়াতী কাজে বের হতেন অত্যন- নির্মল পরিচ্ছন্ন মন নিয়ে। বিশেষ কোন খাবারের প্রতি আকর্ষণ ছিলো না। তবে মাঝে মাঝে দ্বীনি বন্ধুদের সাথে চকলেট কিনে নিজে খেতেন ও অন্যকে খাওয়াতেন।
শহীদ সাব্বির আল্ল্লাহর দ্বীনের পথে নিজের শ্রেষ্ঠ সম্পদ বিলিয়ে দেয়ার আগে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন আল্ল্লাহর পথে মাল কুরবানী দেয়ার। সংগঠনের জন্য অনেক অর্থ ব্যয় করেছেন নিজ পকেট থেকে। বায়তুল মাল থেকে খরচ করার মত খাত থাকা সত্ত্বেও খরচ করেননি শুধু বায়তুল মালের কঠোর হিসাব দিতে হবে আল্লাহর কাছে এই ভয়ে। শহীদ সাব্বির ভাই তার ছোট ভাই আকরামকে অত্যন- যত্নের সাথে ছোট ভাইয়ের হক আদায় করার মানসিকতা নিয়ে যথা সম্ভব গাইড করতেন। তাই ছোট ভাইয়ের ভাষ্য, ‘বড় ভাইয়ার শাহাদাতের খবর শুনে প্রথমে বিশ্বাস করতে পারিনি। কিন' বিশ্বাস আমাকে করতে হয়েছে।’ ১১ মার্চের সকাল বেলার স্মৃতি বলতে গিয়ে ছোট ভাই বাকরুদ্ধ হয়ে যাচ্ছিলেন। যা দেখে আমি নিজেও আবেগে আপ্লুত হয়ে যাচ্ছিলাম। শহীদ সাব্বির সংগঠনের নেতার আনুগত্যের প্রতি ছিলেন অত্যন- আন্তরিক। সংগঠনের পক্ষ থেকে সংবাদ দিলেন আজ ১১ মার্চ সকাল ৯-৪০ মিনিটের বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়িতে ক্যাম্পাসে যেতে হবে। বাড়ির সকল জরুরি কাজ সমাপ্ত করে রান্না ঘরে মায়ের কাছে খেতে গিয়ে দেখেন রুটি এখনো ভাজা হয়নি। তাড়াহুড়ো করে চুলোর ওপর থেকে দু'টো রুটি খেয়ে ক্যাম্পাসে রওয়ানা দেন। শহীদ সাব্বির জানতেন না এটাই আল্ল্লাহর তরফ থেকে দুনিয়ার সর্বশেষ রিজিক। শহীদ সাব্বির দ্বীনের দাওয়াতী কাজসহ অন্যান্য কাজ আঞ্জাম দিয়ে যেটুকু অবসর সময় পেতেন তা কুরআন তিলাওয়াত আর জিকির করে কাটাতেনে। যারা আল্লাহর দাসত্ব কবুল করেছে তারা জিকিরের মধ্য দিয়েই তাদের সময় অতিবাহিত করেন।
শহীদ সাব্বির শাহাদাত বরণ করে যেমন নিজে হয়েছেন ধন্য, তেমনি রেখে গেছেন এই জমিনের জন্য একটি অনুকরণীয় আদর্শ। তৈরি করে দিয়েছেন কিছু চেতনা, কিছু অনুপ্রেরণা। সূর্য উদিত হয় প্রতিদিনের ন্যায়। কোন কোন দিন এমনও আছে রৌদ্রজ্জ্বল সকাল আর রৌদ্র তাপদগ্ধ দুপুরের পর দিনের শেষে বিকেল এসে সৃষ্টি হয় অমাবস্যার রাত। কিন' অমাবস্যার ঘন কালো রাতও পোহায়। অতঃপর দিনের আলোয় চারদিক আবার আলোকিত হয়। কোন কোন জীবনও এরকম দিন আর রাত্রির মত। স্বীয় প্রতিভা গুণে গুণান্বিত এসব মানুষ অনুরাগীদের আকৃষ্টই করেন, হয়ে ওঠেন আলোচনার বিষয়বস', স্বীকৃত হয় তাদের প্রতিভা। রক্তের স্রোতধারার উৎস শহীদ সাব্বিরের আত্মা শানি- পাবে একটি সফল ইসলামী বিপ্ল্লব সাধনের মধ্য দিয়ে, যখন দুনিয়ার মানুষ আল্ল্লাহর আইন-কানুনের পাবন্দ করবে। ধুয়ে যাক সকল কালিমা, সফল হোক শহীদ সাব্বিরের রক্ত। “পাথরে পারদ জ্বলে
জলে ভাঙ্গে ঢেউ
ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে জানি
গড়ে যাবে কেউ।”
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন