আমি অনেক দিন থেকে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরকে ভাল বাসতাম, সমর্থন করতাম। আবার মাঝে মাঝে আফসোস লাগত যে ঈশ! আমি এ কি করতেছি? আমার এ কাজটা (সমর্থন করা) ঠিক হচ্ছে না।
মাওলানা মওদুদীকে নিয়েও বার বার আমার মনে প্রশ্ন উঠত, তার বক্তব্যের জন্য বাংলাদেশের কওমী মাদ্রাসার আলেমরা তাকে গোমরাহ বলে থাকে। তার তাফসীরটাতে নিজের মত দিয়ে তাফসীর করেছে। কোন মুসলমানের জন্য তার তাফসির পড়া উচিত নয়। আরও কত কী।আমিও তাদের সাথে একমত পোষণ করতাম।
শিবিরের যারা শহীদ হয় তাদের শহীদ হওয়া নিয়েও আমার সন্দেহ হত। জামায়াতে ইসলামীকে মনে মনে দোষ দিতাম তাদেরকে শহীদ বলে উল্লেখ করার জন্য। কেন এদেরকে শহীদ বলে? এ জন্য আমি দেশের একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকা সত্ত্বেও শিবিরের সাথে গাড় সম্পর্ক স্থাপন করিনি।
মাওলানা মওদুদীকে নিয়েও বার বার আমার মনে প্রশ্ন উঠত, তার বক্তব্যের জন্য বাংলাদেশের কওমী মাদ্রাসার আলেমরা তাকে গোমরাহ বলে থাকে। তার তাফসীরটাতে নিজের মত দিয়ে তাফসীর করেছে। কোন মুসলমানের জন্য তার তাফসির পড়া উচিত নয়। আরও কত কী।আমিও তাদের সাথে একমত পোষণ করতাম।
শিবিরের যারা শহীদ হয় তাদের শহীদ হওয়া নিয়েও আমার সন্দেহ হত। জামায়াতে ইসলামীকে মনে মনে দোষ দিতাম তাদেরকে শহীদ বলে উল্লেখ করার জন্য। কেন এদেরকে শহীদ বলে? এ জন্য আমি দেশের একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকা সত্ত্বেও শিবিরের সাথে গাড় সম্পর্ক স্থাপন করিনি।
একবার এক ভাইয়ের রুমে গিয়ে কথাবার্তা বলছি। সামনে থাকা ২৮ শে অক্টোবর ২০০৬ এ পল্টনের ঘটনা নিয়ে লেখা একটা পত্রিকা নিয়ে পড়ছি। তখন থেকেই ওই বড় ভাই আমার সাথে বিভিন্ন কথাবার্তা বলছেন। একবার বললেন: আমাকে রিপোর্ট রাখার জন্য। আমি বললাম: রিপোর্ট রাখব কোন সমস্যা নেই। তবে, আমি সংগঠনের কোন মাসিক বৈঠকে যাব না। আর আমি সকল ইসলামী সংগঠনকেই ভাল বাসি। তিনি আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন যে, শিবির সম্বন্ধে আপনার কোন কথা আছে কিনা? সমালোচনা, অভিযোগ ইত্যাদি আছে কিনা?
আমি বললাম: আমি জামাত ও শিবিরের কাজকর্মকে ভালোবাসি। কিন্তু, মাওলানা মওদুদীকে নিয়ে আমার আপত্তি আছে। তার তাফসীর ও অন্যান্য বইয়ের কারণে আমি তাকে গ্রহণ করতে পারি না।
যাহোক, এভাবেই ছিলাম। একদিন সংগঠনের একটা নির্বাচন অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। গেলাম সেখানে। আমাকে নিয়ে যাওয়া হল। কেননা, আমি তখন তাদেরকে সমর্থন দিচ্ছি। গিয়েই আশ্চর্য হলাম। দেখলাম- ব্যালট পেপারে নির্বাচন হল । নির্বাচনের আগে কেউ প্রার্থী নয়। সবাই প্রার্থী আবার সবাই ভোটার। কেউ যদি কোনভাবে নিজের পক্ষে বা বিপক্ষে ভোট চায়। তার বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা নেয়া হয়।
নির্বাচন শেষ হয়ে যাওয়ার পর যখন নাম ঘোষণা শুরু হল। তখন যাদের নামই ঘোষণা করা হল দেখলাম তারাই কান্নাকাটি করা শুরু করে দিল। আল্লাহু আকবার!!!!!!!!! আমি চিন্তা করলাম ও আশ্চর্যান্বিত হলাম। এটাই তো ইসলামের সিস্টেম। ইসলাম তো কাউকে পদ চেয়ে নেয়ার অনুমতি দেয় না। এরাও তো সেই রকম।
সবাই কান্নাকাটি করছে দায়িত্ব সুষ্টুভাবে আদায় না করতে পারলে আল্লাহ তায়ালার কাছে কি জবাব দেবে? যদি সে জবাব না দিতে পারে তাহলে তো তার কোন নিস্তার নেই!!
এভাবে তাদেরকে দেখা যায়- যে তারা নিজেরা দায়িত্ব পাওয়া থেকে লুকিয়ে থাকার চেষ্টা করে থাকে। অনেক সময় তারা বাচ্চার মত জোরে জোরে চিৎকার দিয়ে কান্নাকাটি করে।
দেখে বুঝলাম যে, অন্য কিছু না হলেও ইসলামের এই জিনিসটাকে তো তারা পালন করছে। সেটাই বা কম কিসের?
এর পর আমার অভিযান শুরু হল- মাওলানা মওদুদী ও তার বইকে নিয়ে। যখন তার একেকটি বই দেখি আর তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগগুলো যাচাই করে দেখি তখন আশ্চর্য হই যে, উক্ত অভিযোগের অধিকাংশেরই কোন ভিত্তি নেই।
আর তার বইতে যে অভিযোগগুলোর সত্যতা পাওয়া যায় সেগুলো দেখলাম যে, যিনি তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন মাওলানা মওদুদীর মত তার মতের বিরুদ্ধে গেছে এইজন্যই তিনি তার বিরুদ্ধে বলছেন।
অথচ, ওই ব্যাপারে মাওলানা মওদুদী যে মত পোষণ করেন তার স্বপক্ষে অনেক আলেমের বক্তব্য রয়েছে।
সেদিন থেকেই জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের উপর আমার ভালোবাসার পরিমাণ অত্যাধিক বেড়ে গেল।
আগে আমি ছিলাম অত্যন্ত ভীত। কিন্তু, এখন আলহামদুলিল্লাহ আমি জেল কিংবা বুলেটকেও আর ভয় করি না। মাঝে মাঝে জেলে যাওয়ারও স্বাদ জাগে।
ঈশ! জেলে না গেলে কি আমার ঈমানের মজবুতী আসবে? জেলে যাওয়া কত মজা!!!
আর সবাই দুয়া করবেন। আল্লাহ তায়ালা যেন আমাকে শহীদী মৃত্যুর তাওফিক দান করেন। আমীন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন