***যে ব্যক্তি আল্লাহর পরিবর্তে এমন বস্তুর পূজা করে, যে কেয়ামত পর্যন্তও তার ডাকে সাড়া দেবে না, তার চেয়ে অধিক পথভ্রষ্ট আর কে? তারা তো তাদের পুজা সম্পর্কেও বেখবর।*****আল্লাহ ছাড়া সত্য কোন উপাস্য নেই, তিনি চিরঞ্জীব, সবকিছুর ধারক। *** ওই ঈমানদারদের সাথে তাদের শত্রুতার এ ছাড়া আর কোন কারণ ছিল না যে তারা সেই আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছিল, যিনি মহাপরাক্রমশালী এবং নিজের সত্তায় নিজেই প্রশংসিত – (আল বুরুজ-৮) || যারা মুমিন পুরুষ ও নারীদের ওপর জুলুম - নিপীড়ন চালিয়েছে ,তারপর তা থেকে তওবা করেনি, নিশ্চিতভাবেই তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের আযাব এবং জ্বালা - পোড়ার শাস্তি – (আল বুরুজ-১০) || যারা ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করেছে নিশ্চিতভাবেই তাদের জন্য রয়েছে জান্নাতের বাগান যার নিম্নদেশে প্রবাহিত হতে থাকবে ঝরণাধারা৷ এটিই বড় সাফল্য – (আল বুরুজ-১১) || এই ওয়েবসাইট সম্পর্কে আপনার মতামত ও গঠনমূলক সমালোচনা জানিয়ে ই-মেইল করুন। *** হে আল্লাহ,আমাদেরকে তোমার সত্যের পথে পরিচালিত কর। আমাদের সম্মুখে তোমার পথ সহজ ও সরল করে দাও। আমীন...!

মঙ্গলবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১০

যুদ্ধাপরাধ ও ন্যায়বিচার

বিচার ব্যবস্থা নিয়ে কোন কথা বলার সুযোগ নেই, আদালত অবমাননা হয় তাতে। তবুও মুখ বুজে সব কিছু মেনে নিলে নিজেকে গাধা মনে হয়, চোখবুজে সত্যকে যে আড়াল করা দায়। বিশ্বে মানবাধিকার লংঘন নতুন কিছু নয়। অথচ ন্যায় অন্যায়ের ভেদাভেদ না করে কাউকে দোষী সাব্যস্ত করা কোন সভ্য সমাজেই স্বীকৃত নয়। বাংলাদেশ তৃতীয় বিশ্বের দূর্ণীতিতে চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় এখানে মানবাধিকারের লংঘনের হারও বেশী। বিশেষ করে সরকারের অনৈতিক হস্তক্ষেপে ন্যায়বিচার প্রতিনিয়ত ব্যহত হয় এদেশে। নিম্নআদালত থেকে সরকার বিরোধী কেউ সহজে জামিন পেয়েছে এমন ঘটনা ভাবা যায় না এখানে।

বাংলাদেশে বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড বেড়েই চলেছে। আর এ হত্যাকান্ডগুলোর জন্য ন্যায় অন্যায় তলিয়ে দেখার কোন প্রয়োজন পরে না, প্রয়োজন শুধু জনসমর্থন। জনগণের সেন্টিমেন্ট যেদিকে সে কাজটিকে বৈধ অবৈধ যে কোন পন্থায় হাসিল করতে এখানে কারো বাধে না। কোন নিরপরাধ লোককে যদি অধিকাংশ জনগণ শুলে চড়াতে আগ্রহী হয়, সরকার তবে সে কাজটি করতে কিছুকেই পিছপা হয় না। আবার আকন্ঠ দূর্ণীতি, হত্যা সন্ত্রাসে নিমজ্জিত রাজনীতিবিদেরা সব কিছুতেই পার পেয়ে যায় জনগণের অকুন্ঠ সমর্থনে। ন্যায় অন্যায় এখানে মূখ্য নয়, জনগণ কি চায় সেটাই বিবেচ্য বিষয়। সাম্প্রতিককালে এর বেশকিছু নজীরও আমরা দেখতে পাই।
বিডিয়ার বিদ্রোহে বাংলাদেশের যে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে, বাংলাদেশের সবচেয়ে মেধাবী সোনার ছেলেরা নির্মমভাবে প্রাণ দিয়েছে তা ইতিহাসে বিরল। স্বাভাবিকভাবেই দেশের অধিকাংশ জনগনই এ হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করে আসছে। আর তাই বিডিআর হত্যাযজ্ঞে সাধারণ মানুষের মনে যে ক্রোধের সঞ্চার হয়েছে তাকে পুঁজি করে হত্যাকরা হয়েছে বেশ কিছু বিডিআর জওয়ানকে। বিচারের কাজ এখনো শেষ হয় নি, চলছে সবে শুনানী, তদন্ত রিপোর্টগুলোও আলোরমুখ দেখেনি, অথচ একে একে সাতচল্লিশটি জওয়ানকে প্রাণ দিতে হলো নিরাপত্তা হেফাজতে। বিডিআর জওয়ানেরা এতটাই নার্ভাস, এতটাই দূর্বল চিত্তের যে হার্ট এটাক করেই একে একে মরে যাচ্ছে ওরা, দুগ্ধপোষ্য শিশু ছাড়া আর কারো কাছে আদৌ যা বিশ্বাসযোগ্য নয়। অনেকেরই ধারণা প্রকৃত দোষীদের আড়াল করার জন্য জওয়ানদের মুখ বন্ধ করতেই মৃত্যুর ওপারে ঠেলে দেয়া হলো ওদের। বিডিআর হত্যাকান্ডের অবশ্যই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হতে হবে, তবে বিচারের আগেই একে একে জওয়ানদেরকে অত্যাচারে অত্যাচারে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়ার অধিকার সরকারকে কে দিয়েছে?
বাংলাদেশে যখনই স্বাধীনতা বিরোধী কিংবা জামাত শিবির ইস্যু আলোচিত হয় সাধারণ মানুষের চোখে ভেসে ওঠে একাত্তরের ভয়াল ছবি। পত্র-পত্রিকা, রেডিও-টিভি জামাত শিবিরের বিরুদ্ধে এতবেশী প্রচারণা চালিয়েছে যে যারা জামাত শিবির দেখেনি তাদের ধারণা হবে যে এদের প্রত্যেকের মাথায় দুটো করে শিং, মুখে সাপের মতো বিষাক্ত দাত, হাতে শকুনের মতো নখর রয়েছে। তাই একাত্তরে যারা স্বজনদের হারিয়েছেন, যারা প্রত্যক্ষ করেছেন পাক হানাদার বাহিনীর বর্বরতা, কিংবা যারা নতুন প্রজন্ম সবাই বাছ-বিচার ছাড়াই জামাত শিবিরকে নিমূল করতে সরব হয়ে ওঠে। অবশ্যই একাত্তরে পাকিস্তানী হানাদারদের এদেশীয় সহযোগী ছিল, অবশ্যই অনেকে হত্যা নির্যাতন আর লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেছিল একাত্তরে কিন্তু সে দায় এখন কোন বাছ-বিচার ছাড়াই, কোন সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ ছাড়াই যদি জামাত-শিবিরের দু’কোটি কর্মী-সমর্থকের ঘাড়ে তুলে দেয়া হয়, প্রতি মুহূর্তে তাদের নির্মূলের হুমকি দেয়া হয়, চালানো হয় যদি রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস, তবে তাকে মানবাধিকারের কোন ধারায় ফেলা যায় আমার বোধগম্য নয়। আগেও যখন আমি মানবাধিকারের কথা বলেছি, আমার ব্লগার বন্ধুরা অনেকেই মন্তব্য করেছেন, “জামাত শিবির নিধনের মতো পুন্যের কাজ আর নেই”। তাইতো আজো টেলিভিশনে দেখি মিছিলের ছবি,
এ থেকে উত্তরণের কোন পথই কি নেই? যদি অন্যায়ভাবে কোন নিরপরাধ লোককে হত্যার জন্য তাড়াকরে জনতার ঢল, তবে তাকে নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব সরকারের। অথচ সরকার জনতার ঢল দেখে তাদের সেন্টিমেন্টকে পরবর্তী নির্বাচনে ব্যবহারের জন্যে নিরাপরাধ আশ্রয়প্রার্থী বধে আয়োজন সম্পন্ন করে। তাহলে ন্যয়ের পক্ষে দাড়াবে কে? সত্যের পথে অবিচল থাকবে কে? রাষ্ট্র যদি অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয়, রাষ্ট্র যদি নিরাপত্তাদিতে ব্যর্থ হয় তবে সাধারণ মানুষেরা দাড়াবো কোথায়?

কোন মন্তব্য নেই: