ইসলাম শাশ্বত এক ধর্মের নাম। যে ধর্ম আরবের অসভ্য, ইতর আর জগন্য মানুষ গুলোকে সভ্য, ভদ্র, নম্র আর ন্যায় পরায়নের শিক্ষা দিয়ে ইতিহাস শ্রেষ্ঠ মানুষে পরিনত করেছিল। এই ইসলামকে প্রতিষ্ঠার জন্য পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষেরা লড়াই করেছে। অসংখ্য সাহাবী যারা এই ইসলামকে সমাজে বাস্তবায়ন করতে গিয়ে তাদের শরীরের পবিত্র রক্ত আল্লাহর এই জমীনে বিলীন করে দিয়েছেন। কেয়ামত পর্যন্ত এই ধর্মকে সমাজে বাস্তবায়নের আন্দোলন যারা জারী রাখবেন তারাই হলেন দুনিয়ার সেইসব সেরা মানুষদের উত্তরসুরী। তারাই হবে সেই সুসজ্জিত জান্নাতের উত্তরাধিকারী। ইতিহাস কখনো তাদেরকে সহজ ভাবে গ্রহন করেনি, করবেও না। তাতে কি ? বাতিলের যতই গায়ে জ্বালা ধরুক না কেন, ওদের সংবিধানে যতই অপরাধ বলে সংজ্ঞায়িত হোক না কেন। আল্লাহর বিধানে ওরাই হচ্ছেন দুনিয়ার সেরা মানুষদের দলের এক একজন আল্লাহ প্রেমী মুজাহিদ। এমন অপরাধীদের জন্যই আল্লাহ ওয়াদা করেছেন জান্নাতুল ফেরদাউসের, পবিত্র উদ্যানের, যার তলদেশ থেকে প্রবাহিত ঝর্ণাধারা। যেখানে চলে গেছেন আদম, ইব্রাহীম, ইসমাইল, জাকারিয়া, মূসা, ঈসা, মুহাম্মদ (সাঃ) সহ অগণিত নবী-রাসূল ও তাঁদের প্রিয় সাথীরা।
সমাজের আলেম, ওলামা, কোরআনকে হেফাজতকারী মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্র, যাদেরকে আল্লাহ, ও আল্লাহর রাসূল আলাদা মর্যাদা দিয়েছেন। আল্লাহর রাসূল হাদীসে বলেন, হে,আমার উম্মতেরা তোমরা কিন্তু আমার তালাস করে পাইবানা। আমি শেষ নবী আমার পরে নবূওতের আলো নিয়ে আর কেউ আসবেনা। তোমরা যদি দুনিয়া ছাড়তে চাও আর আখেরাত পাইতে চাও; আল্লাহ তায়ালাও কোরানে বলছেন ''ইন্নামা ইয়াখসাল্লাহা মিন ইবাদিহীল ওলামা''। আলেম সমাজ আমার ভয় করে তারা দুনিয়া ত্যাগী। তারা তুচ্ছ এই দুনিয়ার মহব্বত ছেড়ে আখেরাত ধরেছে। আল্লাহর রাসূল বলে ''ও দুনিয়ার মানুষ তোমরাও যদি এগুলো পেতে চাও তাহলে আলেমদের সংস্পর্শে থাকা তোমাদের জরুরী। কারন আলেমদের মজলিসে গেলে তোমাদের সম্পর্ক আল্লাহর সাথে হবে। আল্লাহর প্রতি মহব্বত হবে। আর এখান থেকে আল্লাহ পাওয়ার আলো পাওয়া যাবে। যাদের 'কলব' আল্লাহ তায়ালার মহব্বত দিয়া ভরে রেখেছে , রাসূলের মহব্বত দিয়া ভরে রেখেছে, ভালো ভালো গুনগুলো দিয়া যারা কলব ভইরা রাখছে। তারা আত্মশুদ্ধি ওয়ালা। দুনিয়ার সাথে যাদের কোন তাল্লুক নাই যাদের তাল্লুক হলো আল্লাহ জাল্লাহ শানহুর সাথে। আর এরাই হলো মুসলমান যারা আখেরাতকে দুনিয়ার উপরে প্রাধান্য দিয়েছে। এরাই হলো সত্যিকারে মুমিনে কামেল।
আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী তেমনই অপরাধে অপরাধী। তিনি বাংলা ভাষী কোটি কোটি তৌহিদী জনতাকে সুমিষ্ট কন্ঠে ডেকেছেন আল্লাহর পথে, সত্যের পথে, ঈমানের পথে, কল্যাণের পথে। এমন বাংলাভাষী মুসলিম কে আছেন যিনি সাঈদীর সুমধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে চোঁখের জলে বুক ভাসিয়ে দেয় নি ? সে রকম একজন আল্লাহর প্রিয় বান্দাকে ওরা অন্যায়ভাবে অত্যাচার, নির্যাতন করেই ক্ষান্ত হয়নি। পুরো জাতি দেখেছে কিভাবে ওরা একজন মজলুমের সাথে গালি গালাজের ভাষায় কথা বলে ? এমনকি একজন প্রসিকিউটর তিনিও বিকৃত নাম উপস্থাপন করে গালি গালাজ করে তাকেই শুধু আঘাত দেয়নি। বাংলা ভাষী কোটি কোটি মুসলিম জনতাকে যিনি নবীপ্রেমে কাঁদতে শেখালেন। তাদের সকলের হৃদয়ে তারা এই আঘাত দিয়েছে। যাদের মাঝে রাসূলের সামান্যতমও সুন্নাতের বালাই তালাস করে পাওয়া যায়না। ইবাদাত বন্দেগীর ঘ্রান তালাস করে পাওয়া যায়না। গুনাহের দুর্গন্ধ দিয়ে পুরো ব্যক্তি জীবনটা যাদের ভরপুর। গুনাহের দুর্গন্ধ দিয়ে তাদের পু্রা পারিবারিক জীবন ভরপুর। বেপর্দা আর বেহায়াপনার সয়লাভ দিয়ে তাদের সামাজিক জীবনটা বরবাদ হয়ে আছে। যাদের 'কলব' গুলোসব পাপাচার দিয়ে ভরপুর হয়ে আছে। তাদের সেই অপবিত্র মুখ দিয়ে একজন সন্মানিত মুফাচ্ছিরে আলেমকে গালির ভাষায় কটুক্তি করার দূঃস্বাহস কেবলমাত্র আবু জেহেলের উত্তরসূরি ছাড়া আর কারো পক্ষে সম্ভব হতে পারেনা। এত অপমানের পরেও কিন্ত আল্লাহর প্রিয় বান্দারা তাদের বিনয় আর নম্র ব্যাবহার দিয়ে ঠিকই কিন্তু রাসুলের উত্তরসূরিদের মত তাদের লক্ষ্যপানে এগিয়ে যাচ্ছে। এই চরিত্রের নাম হচ্ছে আখলাকে আজীমা।
তাদের ভিতর আখলাকে আজীমা আছে। দুনিয়ার থেকে তাদের সম্পর্ক খুবই নড়বড়। দুনিয়া থেকে তারা নিজেদের আলগ করে নিয়েছে। এজন্য তাদেরকে গালি দিলে তারা কিছু কয়না। ছোট, ছোট বাচ্ছাদের বলে রাজাকার, কিছু কয়না। কোরআন শরীফ পড়ে, এদেরকে বলে জঙ্গী, বোমা বানায়, কিছু কয়না। এদেরকে মৌলবাদী বলে গালি দেয়, এদেরকে রাজাকার বলে গালি দেয়, এরা নাকি তালেবান সন্ত্রাসী, সন্ত্রাসী বলে কোরান ওয়ালাদেরকে গালি দেয়। আল্লাহর কসম, তোদের গায়েও রক্ত আছে। এই বাংলার জমীনে ওলামায়ে কেরামদের গায়েও তাজা রক্ত আছে। এই রক্তের সাথে বদরের রক্তের সম্পর্ক। এই রক্তের সাথে ওহুদের রক্তের সম্পর্ক। এই রক্ত ঐ যুদ্ধের ময়দানে যত সাহাবীরা রক্ত দিয়েছে ঐ তাজা জেহাদের প্রেরনায় উজ্জীবিত রক্ত। ঐ রক্ত গুলোর সাথে এই রক্তের সম্পর্ক। যদি এরা আখলাকে পয়গাম্বরের ওয়ারাসাত না পাইতো 'আল্লাহর কসম' এরা যদি তোদের রক্তের মত রক্তওয়ালা হইতো তাহলে যেই জিহ্বাটা দিয়ে গালি দাও তোমাদের সেই জিহ্বাটা টান দিয়া ছিড়া ফালাইয়া দিত। বেয়াদবের গোষ্টী কোথাকার; আল্লাহর দুশমনের গোষ্টী কোথাকার। আল্লাহর রসূলকে আবু লাহাব, আবু জেহেলের গোষ্টীরা গালি দিয়েছিল। বর্তমান যুগে ওলামায়ে কেরামদেরকে যারা গালি গালাজ করে। ইসলামকে সমাজে বাস্তবায়নের প্রচেষ্টায় রাসূলের উত্তরসূরী; ইসলামী চিন্তাবিদদেরকে যারা গালি গালাজ করে। ওরা আবু জেহেল, আবু লাহাবের রক্তের সাথে ওদের সম্পর্ক ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন